রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • সাবেক ৮ মন্ত্রীসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবর বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ছাড়া টেকসই বিনিয়োগ সম্ভব নয়: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম ম্যাচেই বাধা প্রকৃতি, বৃষ্টি শঙ্কায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ ৪০ বছরের রপ্তানি খাতে নজিরবিহীন সংকট দেখিনি: এ. কে. আজাদ যুক্তরাজ্যে সম্পদ বিক্রি করছেন কিছু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য গোপালগঞ্জে পরিস্থিতির কারণে গুলি করেছে সেনাবাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পানিশূন্য হতে চলেছে কাবুল, ইতিহাসে নজিরবিহীন শঙ্কা যুক্তরাজ্যে গোপনে সম্পদ হস্তান্তর করছেন হাসিনা ঘনিষ্ঠরা শেখ হাসিনা জাতির কলঙ্ক, তাকে ক্ষমা নয়: মির্জা ফখরুল ২৮তম বিসিএসের ডিসি মাসুদের নতুন দায়িত্বে চমক
  • বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বিলুপ্তির পথে মাটির মটকি

     বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বিলুপ্তির পথে মাটির মটকি
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলমাটির তৈরি করা মটকি হারিয়ে যাওয়ার পথে ‌। বেশি দিন নয় এক দশকের ব্যবধানে প্লাস্টিক পণ্যই বাজার ভরপুর হওয়ায় মাটির তৈরি মটকা হারিয়ে যাওয়ার পথে ‌। বিশেষ করে এই মাটির তৈরি মটকার পানি সব সময় ঠান্ডা থাকত সে কারণে উপকূলীয় মানুষের কাছে এটি এক সময় খুব জনপ্রিয়তা ছিল ‌। 

    বর্তমানে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে খাবার পানির সংকটের কারণে সরকারিভাবে বেসরকারিভাবে প্লাস্টিক ড্রাম সরবরাহ করায় এবং বাজারে প্লাস্টিক ড্রাম বাজারজাতকরণ করায় অনেকেই তা কিনে নিয়ে ব্যবহার করছে আবার অনেকেই সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অধিদপ্তর মাধ্যমে পাচ্ছেন আবার অনেকেই এনজিওদের মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন ।সে কারণে পানি সংরক্ষণ করার জন্য মাটির তৈরি মটকা হারিয়ে যাওয়ার পথে ‌।

    বিশেষ করে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা ,বাগেরহাট ,পিরোজপুর ,ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা ,পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ,ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এই অঞ্চলের মানুষ বেশি করে ব্যবহার করতেন মাটির তৈরি করা মটকা ‌।কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি মটকা বা মটকি। এক সময় এটি সবার বাড়িতে এক-দুইটা থাকলেও এখন খুব একটা দেখা যায় না। মটকিতে রাখা চাল সহজে পোকা ধরে না এবং গন্ধ ও স্বাদও দীর্ঘদিন অটুট থাকে। তাছাড়া মাটি থেকে তৈরি বলে এ জাতীয় পাত্রের সংস্পর্শে থাকার ফলেও চালে কোনো ক্ষতিকারক উপাদান মিশে না।

    মটকি তৈরি কুমার শিল্পের কারিগরের তথ্যে জানা যায়, প্রথমে নরম এঁটেল দোআঁশ মাটি সংগ্রহ করা হয় সাধারণত ধানি জমি কিংবা নদীর গর্ভ থেকে। সেই মাটিকে ভালো মতো দলিতমথিত করে জমিয়ে রাখা হয় এক স্থানে। তারপর সেখান থেকে মাটির হালকা একটা স্তর এনে একটা কড়াই আকৃতির জিনিসে মাটির স্তরটি বসিয়ে মটকার তলা বানানো হয়। তারপর সেই তলার পাশ দিয়ে আরো স্তর যোগ করে মটকার কিনারা তৈরি করা হয়। অনেক সময় আগে থেকে তৈরি করা রিং পরিয়ে দেওয়া হয় স্তরে স্তরে। এ সময় আগের স্তরের সঙ্গে নতুন স্তরকে আটকে দেওয়ার জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে জোড়াগুলো ভিজিয়ে পলিশ করে নেওয়া হয়। কখনো সামান্য গোলাকৃতি কোনো বস্তু দিয়ে ভেতর থেকে চাপ দিয়ে মটকার গোলাকৃতি বজায় রাখা হয়। সবশেষে কলসের মতো গলার অংশের একটা স্তর যোগ করা হয়। সাধারণত কলস যেভাবে চাকার ওপর রেখে বানানো হয়, মটকার বিশাল আকৃতির কারণে সেভাবে বানানো সম্ভব হয় না।

    ৯০ দশকে গৃহস্থের বাড়িতে এ রকম অনেক বড় বড় মটকা ও গোলা ছিল। ওই সময় গৃহস্থরা এখনকার মতো ধান চাল বিক্রি করত না। ফসল উৎপাদন ছিল কম। বর্তমান সময়ে নানা ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। গৃহস্থরা উৎপাদিত ফসল মাঠ থেকে ঘরে না তুলেই বাড়ির বাইরে থেকেই ব্যবসায়ীদের ঘরে দিয়ে আসছে। ফলে এখন ধান সংরক্ষণের জন্য ওইসব মটকি ব্যবহার গৃহস্থদের তেমন প্রয়োজন হচ্ছে না।

    এখন ইটের তৈরি বাড়িঘরের সংখ্যা বেড়েছে। শহরের মতো করে গ্রামগঞ্জেও তৈরি করা হচ্ছে বাড়িঘর। ওইসব বাড়িঘরে গৃহস্থরা খাবার জন্য শুধু চাল সংরক্ষণ করে থাকে। সেটাও করে থাকে লোহার বা প্লাস্টিকের তৈরি ড্রামে। কালের বিবর্তনে বর্তমান সময়ে মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটায় এবং ফসল উৎপাদনের ধরনের পরিবর্তন হওয়ায় সেগুলোর ব্যবহার না থাকায় প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব এ মটকি এখন বিলুপ্তপ্রায়।

    কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, প্রাচীন সময় থেকে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার জন্য নানা ধরনের সঞ্চয় আধার বা মাটির মটকা ব্যবহার করা হতো। এ ধরনের সঞ্চয় আধার বা মটকার প্রচলন ছিল। ওই সময়ে দেশের যেসব অঞ্চলে সম্ভ্রান্ত মানুষ বসবাস করতেন সে এলাকাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে মটকা পাওয়া যেত। কিন্তু কালের বিবর্তনে বর্তমান সময়ে মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটায় এসব মটকি এখন বিলুপ্তপ্রায়।


    দৈএনকে/ জে. আ
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    A PHP Error was encountered

    Severity: Core Warning

    Message: PHP Startup: Unable to load dynamic library 'tidy.so' (tried: /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so (libtidy.so.5: cannot open shared object file: No such file or directory), /opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so (/opt/cpanel/ea-php74/root/usr/lib64/php/modules/tidy.so.so: cannot open shared object file: No such file or directory))

    Filename: Unknown

    Line Number: 0

    Backtrace: