নোবিপ্রবির তিন শিক্ষার্থী হামলার শিকার, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা


চট্টগ্রাম থেকে বাসযোগে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের নির্মম হামলার শিকার হয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থী। এই মর্মান্তিক ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচিরও ডাক দিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১২ জুলাই) রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী হাজীপুর এলাকার আল বারাকা হাসপাতাল সংলগ্ন কাজী অফিসের সামনে। হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন অনিমেষ দেব নাথ, সৌমেন বড়ুয়া ও কাজী মো. সাউদুজ্জামান—তাঁরা তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী অনিমেষ দেব নাথ জানান, তাঁরা বাঁধন প্লাজা পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে চৌমুহনীতে ফিরছিলেন। বাস থেকে নামার পরপরই একদল অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী তাঁদের ঘিরে ফেলে। তিনি বলেন, "আমার গলা চেপে ধরার চেষ্টা করা হয়, অন্যরা আমাকে ও আমার দুই সহপাঠীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমাদের শরীরজুড়ে নীলাফুলা জখম হয়।"
তিনি আরও বলেন, "হামলার সময় আমার পকেট থেকে ছয় হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সব ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে ফেলা হয়। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনে স্থানীয়দের আচরণ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তারা হুমকি দিয়ে বলে—মামলা করলে মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলবে।"
ঘটনার পর অনিমেষ দেব নাথ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন এবং চৌমুহনীতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। তারা দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না ঘটে।
