বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় এনবিআরের আরও ৬ কর্মকর্তা বরখাস্ত


বদলির আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে শৃঙ্খলাভঙ্গ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন আয়কর ও কাস্টমস বিভাগের আরও ছয় জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—
-
মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৮, ঢাকা)
-
মো. শাহাদাত জামিল, উপ-কর কমিশনার ও এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব
-
হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর)
-
সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার ও উপ-প্রকল্প পরিচালক (ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প)
-
সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা (ঢাকা উত্তর কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট)
-
শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা (খুলনা ভ্যাট কমিশনারেট)।
প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদার ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালেই এনবিআরের কর বিভাগের আরও আট কর্মকর্তা— পাঁচজন যুগ্ম কর কমিশনার ও তিনজন উপ-কর কমিশনার—কে একই অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সকালবেলার বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—
-
মাসুমা খাতুন (কর অঞ্চল-২)
-
মুরাদ আহমদ (কর অঞ্চল-১৫)
-
মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন (কুষ্টিয়া কর অঞ্চল)
-
মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা (নোয়াখালী কর অঞ্চল)
-
আশরাফুল আলম প্রধান (কক্সবাজার কর অঞ্চল)
-
শিহাবুল ইসলাম (উপ-কর কমিশনার)
-
নুসরাত জাহান শমী (রংপুর)
-
ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল (কুমিল্লা)।
সবমিলিয়ে বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অমান্য করে জনসমক্ষে তা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯ (১) ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ হিসেবে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তকালীন সময়ের জন্য তারা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
এর আগে, গত ২ জুলাই এনবিআরের কর ও মূসক বিভাগের চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন কর বিভাগের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মূসক নীতির সদস্য ড. মো. আবদুর রউফ, শুল্ক নীতির সদস্য হোসেন আহমদ এবং বরিশালের কর কমিশনার মো. শব্বির আহমদ।
তাছাড়া, ১ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকেও সাময়িক বরখাস্ত করে ওএসডি হিসেবে এনবিআরে সংযুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২১ ও ২২ জুন এনবিআর থেকে মোট দুই দফায় বদলির আদেশ জারি করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানান। তাদের দাবি, বদলির আদেশগুলো ছিল ‘প্রতিহিংসাপূর্ণ ও দমনমূলক’। এই প্রেক্ষাপটে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তারা আন্দোলনে অংশ নেন এবং ২৪ জুন সংবাদ সম্মেলনের পর প্রকাশ্যে আদেশপত্র ছিঁড়ে ফেলেন।
এন কে/বিএইচ
