নির্বাচন ঠেকাতে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে একটি মহল: বিএনপি


জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ অভিযোগ তোলা হয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বৈঠক শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সভায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বর্বরোচিত হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা গভীর ক্ষোভ ও নিন্দা জানাই। এটি ছিল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, সরকার এ ধরনের হামলার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে চাইছে। এরই পরিণতিতে স্থানীয় প্রশাসনকে ১৪৪ ধারা জারি ও কার্যত কারফিউ দিতে হয়েছে। এটি গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করার আরেকটি কৌশল।
বিএনপি নেতারা সভায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের কর্মসূচি নির্ধারণে সতর্ক না হয়, তবে এতে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি সুযোগ নেবে।
সভায় “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের” সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। সালাহ উদ্দিন আহমেদ এই বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন। বৈঠকে জানানো হয়, ঐক্যমত্যের বিষয়ে আবারও আলোচনার জন্য একই রাতে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে। দেশজুড়ে মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। অথচ সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ।
তিনি দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর অযোগ্যতা ও নিষ্ক্রিয়তার কারণেই পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। সরকারের উপদেষ্টারা শুধু বক্তব্য দিচ্ছেন, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়া মিটফোর্ডে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে ‘অন্যায়ভাবে’ জড়িয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যেসব বক্তব্য দিয়েছে, তা পুরো জাতিকে স্তম্ভিত করেছে বলেও সভায় মন্তব্য করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিশেষ করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে যে অশালীন ও শিষ্টাচারহীন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা পুরো জাতিকে ক্ষুব্ধ করেছে।
