আওয়ামী লীগ নেতা লাজুর দাপটে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী


জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. লাজু মিয়ার লাগামহীন দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
অভিযোগ উঠেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরও এই স্থানীয় নেতা এলাকায় বেপরোয়া আচরণ অব্যাহত রেখেছেন। জুলাই আন্দোলনে সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে সম্মুখ সাড়িতে থেকে ছাত্রদের আন্দোলন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বর্তমানে তার দলের কার্যক্র স্থগিত থাকলেও লাজু মিয়ার ক্ষেত্রে বিপরীত। এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরী করে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন তিনি। যার ফলে পূর্বের মতই এলাকায় দাপট অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয়রা জানান বর্তমানে তিনি বিএনপির পক্ষে থাকায় পুলিশ তাকে ধরতে পারবে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, লাজু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে সাধারণ মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার, দলীয় পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, ওয়ার্ড পর্যায়ে অনিয়মিত ত্রাণ বিতরণ ও বিভিন্ন সামাজিক কাজের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ।
স্থানীয়রা জানান, আমরা ভেবেছিলাম দলীয় নেতৃত্বের পরিবর্তনের পর তার দাপট কমবে, কিন্তু উল্টো পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। প্রশাসনের সামনে প্রকাশ্যেই ক্ষমতার অহংকার দেখাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লাজু মিয়ার কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। বারবার বলা হলেও তিনি কারো কথা শোনেন না। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও তার বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পান না।
স্থানীয়রা আরো জানান, লাজু আওয়ামী সময়ে এমপি নুর মোহাম্মদ (স্থানীয় এমপি) এর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক আর তার সাথে তুলা ছবি দেখিয়ে এলাকার মানুষদের মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দিত। এছাড়াও এলাকায় কোনো সরকারি ত্রাণ আসলেও সব সে নিজেই দখল করত। এখন বিএনপির সাথে চলাফেরা করে। আর তাই এখনো তার সেই দাপট রয়েছে।
এ বিষয়ে লাজু মিয়াকে একাধিকবার ফোনো যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
লাজু মিয়ার বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মানিক সওদাগর বলেন, লাজু মিয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ছিলেন, তিনি কখনেই আমাদের দলে আসতে পারবেন না। আমি বর্তমানে ঢাকাতে আছি। ঢাকা থেকে গিয়ে একটা ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের যে মামলা হয়েছে তা আমাদের থানাতে নাকি অন্য থানাতে হয়েছে তা দেখে আমরা ব্যবস্থা নিব। আর সে যে সাধারণ মানুষকে এখনো হয়রানি করে এই বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব আমরা।
