বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী ভারত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী


নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। এ সময় তিনি ভারতকে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করেন।
ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের পর এসব কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর হাছান মাহমুদের সাথে এটিই প্রথম কোনো বিদেশী রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ।
এই বৈঠকে মন্ত্রী দুই নিকটতম প্রতিবেশীর মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সর্ম্পকের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আগামী দিনগুলোতে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়। দু’দেশের মানুষের মাঝে যোগাযোগ (কানেক্টিভিটি) ও বাণিজ্যের প্রসারে আন্তঃদেশীয় রেল ও সড়ক সংযোগ স্থাপনে চলমান কাজ দ্রুত সমাপ্তির জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’
ভারতকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রার উপর নির্ভরতা কমাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের স্থানীয় মুদ্রা অর্থাৎ বাংলাদেশের টাকা ও ভারতের রুপি ব্যবহারের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এতে করে উভয় দেশই উপকৃত হবে।’
এর আগে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দায়িত্ব গ্রহণে অভিনন্দন বার্তা পাঠানোর জন্য ভারত সরকার এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্করকে ধন্যবাদ জানান। বিনিয়োগ বৃদ্ধি, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল, সীমান্ত হাটের (সাপ্তাহিক বাজার) সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন তারা। পাশাপাশি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে, সে বিষয়েও কাজ শুরু করার ওপর গুরুত্ব দেন মন্ত্রী।
ভারতীয় হাইকমিশনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং ২০২৩ সালকে সবচেয়ে সফল বছর হিসেবে অভিহিত করে বলেন, দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ নিয়ে বড় কয়েকটি প্রকল্প গত বছর সমাপ্ত হয়েছে, নতুন প্রকল্পও উদ্বোধন হয়েছে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম, স্টার্ট আপ উদ্যোগ, বাণিজ্য সহজীকরণ এবং আরো অনেক ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করার ওপর জোর দেন।
প্রণয় ভার্মা বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ড. হাছান মাহমুদকে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং শিগগিরই দিল্লি সফর করবেন বলে জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের হাইকমিশনারকে জানান, ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করতে আন্দোলন-বিক্ষোভের নামে মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়েছে, মানুষ ও যানবাহনের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে আগুনসন্ত্রাস করেছে, এমনকি ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে নির্মমভাবে নারী-শিশুসহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে নির্বাচনে সাড়া দিয়েছে, সারাদেশে গড়ে প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে, কোথাও কোথাও ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে।
