আজ জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ আন্দালিব রহমান পার্থের ৫১তম জন্মদিন


আজ (২০ এপ্রিল) জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের ৫১তম জন্মদিন। একাধারে রাজনীতিবিদ, শিক্ষানুরাগী ও সংস্কৃতিমনা এই ব্যক্তিত্বের জন্মদিন উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ১৯৭৪ সালের ২০ এপ্রিল ভোলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাবেক মন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা নাজিউর রহমান মঞ্জুর সন্তান। পারিবারিক রাজনীতির সূত্র ধরে ছোটবেলা থেকেই তিনি জাতীয় রাজনীতির পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয় ও গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে ১৯৯১ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান। সেখানে তিনি এ-লেভেল সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে বার-এট-ল পাস করে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের সঙ্গে চার বছর কাজ করেন।
২০০১ সালে ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। তৎকালীন চারদলীয় জোটের অংশ হিসেবে তিনি ভোলা-৪ আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চেষ্টা করেন, যদিও মনোনয়ন পাননি। ২০০৮ সালে তাঁর পিতা নাজিউর রহমান মঞ্জুর মৃত্যুর পর তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই বছর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ভোলা-১ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তাঁর গণসংযোগে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। নিকেতন, গুলশান, বনানী, মহাখালী, ওয়ারলেস ও কালাচাঁদপুর এলাকায় তাঁর প্রচারণায় মানুষের ঢল নামে।
তিনি শুধু একজন দক্ষ আইনজীবী ও শিক্ষাবিদ নন, বরং একজন সাহসী ও জনগণের পাশে থাকা রাজনীতিবিদ হিসেবেও পরিচিত। তাঁর রাজনৈতিক জীবন, শিক্ষা, পরিবার এবং সমাজসেবায় অবদান তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট স্থান করে দিয়েছে।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদে তাঁর বক্তৃতা এবং বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে বলিষ্ঠ অবস্থানের জন্য তিনি বিশেষভাবে আলোচিত হন। এমনকি তিনি দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন। সে সময় থেকেই তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে রাজনৈতিক আইডল বা আইকন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর জনপ্রিয়তা শীর্ষে পৌঁছায়।
পার্থ একজন উদারপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত, যিনি রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলেন। তরুণদের মধ্যে রাজনীতির আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে তিনি সবসময় সচেষ্ট ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং টকশোতে তাঁর উপস্থিতি তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, সুষ্ঠু ও ইতিবাচক রাজনীতি দেশকে এগিয়ে নিতে পারে। তিনি বলেন, “রাজনীতি বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। সুষ্ঠু রাজনীতি থাকলেও দেশ বাঁচবে। রাতারাতি কোনো কিছু পরিবর্তন হয় না। সবকিছু আল্লাহতায়ালার হাতে, তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক।”
তিনি তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের মতো যারা ইতিবাচক রাজনীতি করে, তাদের দেখে যেন আরও দশজন তরুণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসে।”
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ তরুণ সমাজের প্রতি তাঁর গভীর দৃষ্টি ও ভাবনা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ দেশের ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি। তাদের চিন্তাভাবনা, উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আগ্রহের অভাব, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, কর্মসংস্থানের সংকট এবং সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তরুণরা অনেক সময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তাদের সম্ভাবনা পূর্ণাঙ্গভাবে বিকশিত হয় না।
তিনি মনে করেন, তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, “তরুণ প্রজন্মের সামনে রাজনৈতিক আইডল তৈরি করতে হবে। তরুণদের জন্য ভালো রাজনীতিবিদ প্রয়োজন, যাদের তারা অনুসরণ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনীতির কলুষিত হওয়ার কারণে তরুণ প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তরুণ সমাজ খুব কম সময়ে অতিরিক্ত সফল হওয়ার চেষ্টা করে। এমন প্রেক্ষাপটে তরুণ সমাজকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। মেধাবী তরুণরা রাজনীতিতে এলে রাজনীতির চেহারা বদলে যাবে।”
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আজকের দিনটি উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। দলের সিনিয়র নেতারা এই দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন। এদিকে, আন্দালিব রহমান পার্থ দেশের বাইরে থাকায় এবার কেক কাটার আয়োজন হচ্ছে না। দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনে তাঁর নেতৃত্বে দলকে আরও সুসংগঠিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতা-কর্মীরা লিখছেন, “দলীয় চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থের জন্মদিনে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আপনি সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবী হোন—এটাই প্রার্থনা।”
অন্য একজন লিখেছেন, “শুভ জন্মদিন পার্থ ভাই! একজন শিক্ষিত, উদারমনা ও ভদ্র রাজনীতিবিদ হিসেবে আন্দালিব রহমান পার্থ ভাই রাজনীতিতে শালীনতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজকের এই বিশেষ দিনে তাঁর প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। শুভ জন্মদিন, আন্দালিব রহমান পার্থ ভাই!”
