হাটহাজারীতে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল এখন সময়ের দাবি


ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশগত গুরুত্ব বিবেচনায় হাটহাজারীতে একটি উন্নত, পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন এখন সময়ের প্রয়োজন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির জেলার প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি থানার জনসাধারণের বা মানুষের যাতায়াতের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হাটহাজারী। এ উপজেলার মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ সংযুক্ত হয়েছে মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও দুই পার্বত্য চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলের সাথে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, হাটহাজারী দারুল উলুম মাদরাসা (বড় মাদরাসা) সহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান এই অঞ্চলে। হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দুইটি ওয়ার্ড এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলারসহ চট্টগ্রাম উত্তরে লক্ষ লক্ষ মানুষের হাতের কাছেই স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে যাবে।
বিশেষ করে এশিয়ার বিখ্যাত স্বনামধন্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা হাটহাজারীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। হাটহাজারী নোমানিয়া মাদ্রাসা, হাটহাজারী জামিয়া উদুদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা , কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ভেটেনারি বিশ্ববিদ্যালয়, ডেইরি ফার্ম, এই এলাকায় সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেসবের সাথে জড়িত কয়েক লক্ষ মানুষ। যারা বিভিন্ন সময় চিকিৎসা নিতে চট্টগ্রামে শহরে যেতে হয় এবং যাওয়ার পথে সড়কে দীর্ঘ যানজটসহ দূরত্বের কারণে অনেক প্রাণ হারায়। এমনকি সুচিকিৎসা না পাওয়ার কারণে জীবনে সবার জীবনে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। তাই হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ জনসাধারণের সুবিধার্থে এবং চিকিৎসা জগতে অবহেলিত হাটহাজারী উপজেলার জনগণের চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে এই হাসাপাতাল স্থাপন জরুরী মনে করে এই সংগঠনটি ৬০ লাখ জনসাধারণের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা মহোদয়ের বরাবর হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে গত ২৮ শে এপ্রিল একটি স্বারক লিপি সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক আসলাম পারভেজ সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক মোঃ বোরহানের নেতৃত্বে হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ এই স্বারক লিপি
প্রদান করেছেন যেনো এই হাটহাজারীতে নির্মিত হয় হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং লক্ষ লক্ষ স্থানীয় সাধারণ মানুষ আধুনিক চিকিৎসাসেবার অভাবে অনেকটাই বঞ্চিত।
প্রস্তাবিত ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট "বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল" চট্টগ্রামে নির্মাণের পরিকল্পনায় হাটহাজারীকে সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ভৌগোলিকভাবে চট্টগ্রামের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায়, হাটহাজারীতে এ হাসপাতাল নির্মিত হলে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি দু্ই পার্বত্য জেলার ২০-২৫টি উপজেলার লোকজনের সুবিধা সহ চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার আনুমানিক এক কোটিরও অধিক মানুষ সহজেই উন্নত স্বাস্থ্যসেবা লাভ করতে পারবে।
হাটহাজারীতে প্রবেশের একাধিক সড়কপথ রয়েছে — কুমিল্লা-ফেনী-রামগড় সড়ক, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি থেকে সরাসরি সংযোগ, মিরসরাইয়ের বাড়বকুণ্ড সড়ক হয়ে, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ থেকেও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এই ছাড়া ফটিকছড়ি হয়ে ফেনীর সাথে যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুবই সুবিধা জনক রয়েছে ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুর জাহান বেগম ইতিমধ্যেই হাটহাজারীর তিনটি সরকারি জমি পরিদর্শন করেছেন। তাই জনগণের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন — একটি পূর্ণাঙ্গ, আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন — বাস্তবায়নের উপযুক্ত সময় এখনই। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্য ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা জানান, এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতপ্রথমতঃ আমি এ মহৎ উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানাচ্ছি। চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল হাটহাজারীতে স্থাপিত হলে চট্টগ্রামের উত্তরাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। স্থানীয় জনগণ উচ্চমানের চিকিৎসা সেবা পাবেন নিজের এলাকায় থেকেই, ঢাকা বা চট্টগ্রাম শহরে ছুটতে হবে না আর রোগী এবং পরিবারের সদস্যদের। এতে সময় ও খরচ দুটোই কমবে। পাশাপাশি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পুরো অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এই হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করছি।
হাটহাজারীর সাংবাদিক মোঃ আবু নোমান জানান, এই হাটহাজারীকে যদি চাইনা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয় তাহলে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ির প্রায় ২৪ টি উপজেলার জনসাধারণ সহ তার পার্শ্ববর্তী এলাকা রাউজান রাঙ্গুনিয়া ফটিকছড়ি হাটহাজারী সীতাকুণ্ড মিরেশ্বরাই এমনকি ফেনীর একাংশ সহ চট্টগ্রামের জনসাধারণ তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে সুযোগ হবে ।
এছাড়া উল্লেখিত এলাকার আনুমানিক ৬০ লাখের উপর জনসাধারণ ভালো চিকিৎসা সেবা নিতে সহজ হবে। ফটিকছড়ি উপজেলার সাংবাদিক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান হাটহাজারীতে এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হলে আমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা পাবে রোগীরা। সাবেক মেখল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ চেয়ারম্যান মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান এই হাসপাতালটি অবশ্যই হাটহাজারীতে প্রতিষ্ঠিত করা এটা সুন্দর একটি যুক্তি কারণ এই এলাকার উপর দিয়ে রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি জনসাধারণ চলাচল করে থাকে তাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে।
এদিকে হাটহাজারী উপজেলার পৌর এলাকায় ফটিকা কড়িয়ার দীঘির পাড় এলাকায় বিশাল সরকারি জায়গা রয়েছে। উক্ত সরকারি জায়গাটি সম্প্রতি কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পরিদর্শন করে গেছেন। সরকারি এই জায়গাতে যেতে প্রস্তু আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ ফুট রাস্তাও রয়েছে কার্পেটিং করা।হাটহাজারীতে উন্নত মানের একটি এক হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।
