শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

গৃহায়নের জায়গায় চসিকের মার্কেট: তদন্তে যুগ্মসচিব, বন্ধ হলো কাজ

গৃহায়নের জায়গায় চসিকের মার্কেট: তদন্তে যুগ্মসচিব, বন্ধ হলো কাজ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকায় অবস্থিত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (জাগৃক) একটি জায়গা দখল করে বহুতল মার্কেট করছে সিটি কর্পোরেশন(চসিক)। গত ১১ মে বিষয়টি নিয়ে ঢাকা পোস্টে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে পরদিনই (১২ মে) এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। সরকারের যুগ্মসচিব ও জাগৃকের সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) সোহরাব হোসেনকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম পৌঁছান যুগ্মসচিব সোহরাব হোসেন। সরেজমিন তিনি জায়গাটি দখলের সত্যতা পান৷ এরপর মৌখিকভাবে তিনি চসিকের প্রধান প্রকৌশলীকে কাজ বন্ধ করতে বলেন। এদিনই চিঠি দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ করতে বলেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান সোহেল।

জাগৃক চট্টগ্রামের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নেজামুল হক মজুমদার বলেন, জাগৃকের সদস্য স্যার চট্টগ্রামে পৌঁছে সরেজমিন তদন্ত করে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন কাজ বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

জানা যায়, হালিশহর বি ব্লক কবর স্থানের পূর্ব পাশে জাগৃকের জায়গাটি বছরের পর বছর খালি পড়ে ছিল। এলাকার আশপাশের দাম অনুযায়ী জায়গাটির মূল্য অন্তত ১০ কোটি টাকা। এটিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণ করছে চসিক। গত বছরের ১৭ নভেম্বর ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বহুতল কিচেন মার্কেট কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

তবে মূল্যবান এই জায়গাটি নিতে কোনো ধরনের টাকা পরিশোধ করেনি চসিক। এমনকি কাগজে-কলমে জায়গাটির মালিক জাগৃকের কোনো দপ্তরে অবহিতও করা হয়নি৷ প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) থেকে আইনানুযায়ী ভবন নির্মাণের অনুমতিও নিতে পারেনি চসিক।

অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের উৎকোচের শর্তে জায়গাটি সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের দেখিয়ে দেয় জাগৃকের চট্টগ্রামের কয়েকজন প্রকৌশলী। এক্ষেত্রে চসিককে আশ্বস্ত করা হয় জাগৃকের কেউ জায়গাটি কাজ করার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবে না। যদিও জাগৃক কর্মকর্তাদের দাবি তারা তাদের জায়গায় চসিকের ভবন নির্মাণ করার বিষয়টি জানেন না।

গত কয়েক বছর ধরে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিশ্বব্যাংককে ম্যানেজ করে বিনিয়োগ করানো এবং অবশেষে ঢাকঢোল পিটিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে চসিক। আবার এই প্রতিবেদক বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে হঠাৎ ঘুম ভাঙে জাগৃক কর্মকর্তাদের। পরবর্তী সময়ে তারা কাগজপত্র ঘেটে দেখা শুরু করে এবং জায়গাটিও পরিদর্শনে যায়। এরপর চসিককে কারণ দর্শানোর চিঠিও দিয়েছে জাগৃক।


রুপন দত্ত, চট্রগ্রাম
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ