স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি বন্ধ করল ভারত


উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শনিবার (১৭ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের ফুলবাড়ি ও চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই সব বন্দর দিয়েই ভারতের বাজারে বাংলাদেশের ৯৩ শতাংশ রপ্তানি পণ্য প্রবেশ করত।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর ও মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বাজারে একতরফাভাবে প্রবেশাধিকার পেলেও ভারতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে তেমন সুবিধা দেয়নি। তাঁর দাবি, “পারস্পরিকতার ভিত্তিতে না চললে একতরফা ছাড় আর নয়।”
এছাড়া ভারত অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ ট্রানজিট ফি হিসেবে প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি ১.৮ টাকা আদায় করছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ হারে তা ০.৮ টাকা। এতে উত্তর-পূর্ব ভারতের শিল্প খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, মেলামাইন, আসবাবপত্র, জুস, কোমল পানীয়, বেকারি ও প্রসেসড ফুডসহ বহু রপ্তানি পণ্য ভারতে পাঠাতে মারাত্মক বাধার মুখে পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসবে তৈরি পোশাক খাতে, যেখান থেকে প্রতিবছর প্রায় ৭৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
ভারতীয় বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে, যদিও ভারতের স্থানীয় উৎপাদকরা এ সুযোগে বাজারে জায়গা নিতে পারে।
নতুন কাগজ/বিএইচ
