হয়রানিমূলক ১১৪৪৮ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ, সহযোগিতা চায় সরকার


রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে—বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বস্তুনিষ্ঠতাহীন বলে মন্তব্য করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৮ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানায়, এ ধরনের মামলার বিষয়ে আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠিত হয়েছে, যা গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিত বৈঠক করছে এবং প্রক্রিয়াগতভাবে মামলাগুলো পর্যালোচনা করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসব মামলার বৈধতা, প্রকৃতি ও পটভূমি বিচার করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক।
এসব সভায় মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর কার্যালয় থেকে পাঠানো তালিকা ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হচ্ছে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন।
প্রত্যাহার হচ্ছে ১১ হাজার ৪৪৮টি মামলা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দ্রুত মামলা প্রত্যাহারের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের সব মামলার এজাহার এবং অভিযোগপত্র আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির কাছে দাখিলের অনুরোধ করা হয়েছে।
কমিটি এ পর্যন্ত ১৬টি সভায় ১১ হাজার ৪৪৮টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে এবং এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মামলা প্রত্যাহারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর আরও তালিকা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, বিএনপি চলতি বছরের ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার এবং জামায়াতে ইসলামী এ বছরের ২৭ এপ্রিল এক হাজার ২০০টি মামলার তালিকা দিয়েছে।
এসব মামলার মধ্যে থেকে প্রায় অর্ধেক ইতোমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বলে জানানো হয়েছে তথ্যবিবরণীতে।
“দুটি রাজনৈতিক দলের প্রেরিত তালিকার সাথে মামলা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি (এজাহার এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিট) প্রেরণ না করায় অন্যান্য মামলা প্রত্যাহারে বিলম্ব হচ্ছে। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গত ২০ মে ৪৪টি মামলা প্রত্যাহারের তালিকা প্রদান করেছে।”
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অন্যান্য কারণে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘হয়রানিমূলক’ সব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করার জন্য দুইটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। এর মধ্যে একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি, আরেকটি মন্ত্রণালয়ের।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চার সদস্যের জেলা কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার), পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাসমূহের জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)।
আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি ছয় সদস্যের। এই কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
সদস্য হিসেবে কমিটিতে আছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা), যুগ্মসচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পর্যায়ের নিচে নয়)।
কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার উপসচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিব।
