সংশোধিত চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে ফের কর্মচারিদের আন্দোলন


“সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাতিলের দাবিতে রোববার (১ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা।
সকাল ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। কর্মচারীরা জানান, তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে তিনজন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সংশোধিত অধ্যাদেশটি সরকারি চাকরির নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “বিক্ষোভ মিছিল শেষে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।”
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রবি ও সোমবার পাঁচজন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কর্মচারীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা “অবৈধ কালো আইন, বাতিল কর করতে হবে”, “কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালে আইন”, “মানি না মানবো না, অবৈধ কাল আইন”, “এক হও লড়াই কর, ১৮ লাখ কর্মচারী”, “ফ্যাসিবাদের দোসরেরা, হুশিয়ার সাবধান” এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে, এমন বিধান রেখে গত ২৫ মে “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” জারি করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদনের পর গত ২৪ মে থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবগুলো সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারা এই অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে অবহিত করছেন।
গত মঙ্গলবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ কয়েকজন সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবির বিষয়টি বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানাবেন সচিবেরা। এরপর সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
পরের দিন বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।
বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, কর্মচারীদের “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” প্রত্যাহারের দাবি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে ফিরলে তাকে জানাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সচিবালয়সহ সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করেন সরকারি কর্মচারীরা।
