যুদ্ধবিরতির পর প্রথম ভাষণে যা বললেন খামেনি


ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১৩ দিনের সংঘাত শেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বক্তব্য দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সিএনএনের বরাতে জানা যায়, এক ভাষণে খামেনি বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পাল্টা জবাবে জায়নিস্ট শাসন কাঠামো তাদের অহংকার ও দাবি-দাওয়ার ভার সহ্য করতে পারেনি। ভ্রান্ত ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ এক সাফল্য এনেছে। এই বিজয় আমাদের সবার।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে তিনি লিখেছে, ইরানি জাতির ঐক্যের জন্য অভিনন্দন। এই জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল।
আলী খামেনি আরও লিখেন, ইরানি জাতি তার স্বতন্ত্র চরিত্র প্রদর্শন করেছে এবং দেখিয়েছে যে, প্রয়োজনে এই জাতির পক্ষ থেকে একটিই কণ্ঠস্বর শোনা যাবে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্সে ইসরায়েলের কথা উল্লেখ তিনি লিখেছেন, ভ্রান্ত ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৬০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। পরদিন বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
