সাভারের কুখ্যাত ডাকাত লেগুনা আপেল গ্রেপ্তার


সাভারে বিভিন্ন হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ একাধিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত ডাকাত সর্দার আপেল মাহমুদ ওরফে লেগুনা আপেলকে মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কেওয়ার লোহারপুল এলাকার এক বাসা থেকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে তার গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিঞা।
সাভারের নয়াবাড়ী-ভাটপাড়া এলাকার বাসিন্দা আপেল মাহমুদ ষষ্ঠ শ্রেণি পাস করেই প্রথমে লেগুনার চালক ও কসাই হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। একসময় গড়ে তোলেন নিজস্ব ডাকাত দল “আপেল ভাইয়ের দল”, হয়ে ওঠেন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার।
জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে “আজকের সংবাদ” নামের একটি অনলাইন পোর্টালের কথিত সাংবাদিক হিসেবে আবির্ভূত হন। পরে মাই টিভির সাভার প্রতিনিধি পদে জায়গা করে নেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের সহযোগিতায়।
কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তথ্য প্রকাশ হলে, মাই টিভি কর্তৃপক্ষ তার প্রতিনিধিত্ব বাতিল করে এবং তাকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানায়।
লেগুনা আপেলের বিরুদ্ধে যেসব গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালিয়ে হত্যাচেষ্টার ৭টি মামলা, অন্তত ৫টি ধর্ষণ মামলা, যার মধ্যে কিশোরী ও গার্মেন্টস কর্মীও রয়েছে, বিএনপি ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে ডাকাতি ও লুটপাট, সাংবাদিকদের উপর হামলা-ক্যামেরা ছিনতাই ও অফিসে ভাঙচুর, চাঁদা না পেয়ে বিকাশ দোকানি দেলোয়ার হোসেনকে জঙ্গি সম্পৃক্ততার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, মসজিদে সালিশে গিয়েও টাকা আত্মসাৎ, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেইলিং।
ওসি মো. জুয়েল মিঞা বলেন, “লেগুনা আপেল একজন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের নেতা। সাংবাদিকতার আড়ালে থেকে বহুদিন যাবৎ অপকর্ম করে গিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়কার হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি। তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি চলছে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর লেগুনা আপেল গা-ঢাকা দেন। তিনি প্রথমে পাবনা, পরে বগুড়া ও অবশেষে মুন্সীগঞ্জে আত্মগোপন করেন।
সাইদুল আলম তৌহিদ, সাভার
