শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

চকলেট আমদানির নামে রাজস্বচুরি!

চকলেট আমদানির নামে রাজস্বচুরি!
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

শ্রীলঙ্কা থেকে 'কিন্ডার জয়' ব্র্যান্ডের চকলেট আমদানির ঘটনায় বিপুল পরিমাণ শুল্ক ও কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান বরাবর দায়ের করা একটি অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ টাকার শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাস করা হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে শ্রীলঙ্কা থেকে আমদানি করা চকলেটের প্রকৃত মূল্য ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ২৯২ মার্কিন ডলার। অথচ বিল অব এন্ট্রিতে মাত্র ৪৬ হাজার ৮৪১ ডলার ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রায় এক লাখ ২০ হাজার ডলার গোপন করায় শুল্ক ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় দুই কোটি টাকার কাছাকাছি।

এছাড়া অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বি অ্যান্ড বি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং তাদের পক্ষে কাজ করা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বিপ্লব ট্রেড ওভারসিজ ভুয়া ইনভয়েস দাখিল করে। এজেন্টটির মালিক মো. আলতাফ হোসাইন চৌধুরী বাচ্চুর বিরুদ্ধে রয়েছে অতীতেও শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাসের একাধিক অভিযোগ।

জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্যের উৎস দেশ ছিল ভারত, তবে চালানটি এসেছিল শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে, বিএস কার্গোর মাধ্যমে। পেমেন্ট করা হয় শ্রীলঙ্কার দি কর্মাশিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসির মাধ্যমে, যদিও ইনভয়েসে ক্রয় উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে দুবাইয়ের একটি প্রতিষ্ঠানকে।

অভিযোগ অনুযায়ী, আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের তথ্যে ছিল বিস্তর গরমিল। বিল অব এন্ট্রির সঙ্গে ইনভয়েস ছিল অসঙ্গতিপূর্ণ এবং চালান খালাসের ক্ষেত্রে ঘুষের লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৮৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে এনবিআরের বোর্ড প্রশাসনের প্রথম সচিব মো. জাহিদ নেওয়াজ বলেন, "যে কোনো অভিযোগ জমা পড়লে তা যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা হয় এবং সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।"

অন্যদিকে, সিঅ্যান্ডএফ নেতা আলতাফ হোসাইন চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার জাকির হোসেনের প্রতিক্রিয়াও পাওয়া যায়নি।

অতিরিক্ত একটি মতামত দিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দার সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মো. মিনহাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, "চকলেট ও খেলনার আলাদা শুল্কায়নের জন্য আমরা চালানটি লক করেছিলাম। পরে এনবিআরের নির্দেশনায় তা খালাস হয়। এনবিআরের কয়েকটি গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করে এসব অভিযোগের সত্যতা পায়নি।"

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ ঘটনা কেবল একটি পৃথক অনিয়ম নয়, বরং এটি বৃহৎ একটি সিন্ডিকেটের অংশ, যারা দীর্ঘদিন ধরে ঘুষের বিনিময়ে শুল্ক ফাঁকির মাধ্যমে পণ্য খালাস করে আসছে।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন