শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

রপ্তানির আড়ালে ১,৫০০ কোটি টাকা পাচার, এক্সিম ব্যাংককে জরিমানা

রপ্তানির আড়ালে ১,৫০০ কোটি টাকা পাচার, এক্সিম ব্যাংককে জরিমানা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান ফ্যাশন কমফোর্ট লিমিটেড রপ্তানির আড়ালে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এ অর্থ পাচারে সহায়তা করায় এক্সিম ব্যাংককে জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, জরিমানার অর্থ পরিশোধে ব্যাংকটি পদক্ষেপ না নেওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত তাদের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ কেটে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ এক বিশেষ তদন্তে এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার মাধ্যমে এই অর্থ পাচারের বিষয়টি সম্প্রতি শনাক্ত করে। 

পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার মাধ্যমে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ফ্যাশন কমফোর্ট লিমিটেড ৪৬টি বিক্রয় চুক্তির আওতায় ১৬১টি রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়েছে। এই সময়ে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে ২৬ লাখ ২৯ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।

এসব রপ্তানির প্রতি ইউনিট তৈরি পোশাকের দাম দেখানো হয়েছে ২০ থেকে ৭৮ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ ব‍্যাংকের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে, এইসব পোশাকের দাম ছিল প্রদর্শিত মূল্যের চেয়ে ১০ থেকে১২ গুন বেশি। এই রপ্তানিগুলোর মাধ্যমে ৩ কোটি ৪০ ডলার দেশে আসার কথা থাকলেও এসেছে মাত্র ২৮ লাখ ২৯ হাজার ডলার। পন্যের দাম কম দেখিয়ে ফ্যাশন কমফোর্ট লিমিটেড পাচার করেছে প্রায় ৩ কোটি ১২ লাখ ডলার।বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ৩‌‌'শ ৮১ কোটি টাকা। 

শুধু রপ্তানি মূল্য কম দেখিয়েই নয়, রপ্তানি পন্যের ওজন বেশি দেখিয়ে (ওভার শিপমেন্ট) তৈরি পোশাকের সঙ্গে অন্য কোন পন্য রপ্তানি করেছে ফ্যাশন কমফোর্ট। বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের প্রতিবেদন বলছে, রপ্তানির সময় প্রতিটি গার্মেন্টস পন্যের ওজন ৯৮০ গ্রাম দেখিয়েছে গাচারকারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরেজমিন এসব পণ্যের ওজন ৩ থেকে ৪ গুণ কম পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল।

একটি পণ্যের  বিপরীতে আরও তিন থেকে চারটি পণ্য বেশি রপ্তানি করেছে ফ্যাশন কমফোর্ট এই হিসাবে রপ্তানির আড়ালে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে ফ্যাশন কমফোর্ট লিমিটেড।

রপ্তানির আড়ালে বিপুল আকের অর্থ পাচারের বিষয়টি এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অবহিত করেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ কারণে এক্সিম ব্যাংককে চলতি বছরের ১৮ মার্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ। জরিমানার অর্থ জমা দেওয়ার জন্য ওইদিন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেওয়া হলেও এক মাসে উত্তর দেয়নি এক্সিম ব্যাংক। এর প্রেক্ষিতে গত ১৮ এপ্রিল ব্যাংকটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংরক্ষিত রিজার্ভ একাউন্ট থেকে জরিমানার অর্থ কেটে নেয়া হয়েছে।

অর্থ পাচারে সহায়তাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ  কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে ভারপ্রাপ্ত এমডি আবদুল আজিজকে কল দিলেও কল ধরেননি।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন