শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

স্থল বাণিজ্যে বিধিনিষেধ: দিল্লির বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না ঢাকা

স্থল বাণিজ্যে বিধিনিষেধ: দিল্লির বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে না ঢাকা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাকসহ কয়েকটি বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিতে ভারত নতুন করে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় ‘পাল্টা কোনো পদক্ষেপ’ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে এ অবস্থান তুলে ধরেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, “আজ আমরা অংশীজনদের সঙ্গে বসে মতামত নিয়েছি। চেষ্টা থাকবে যেন পরিস্থিতির আরও অবনতি না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমরা তাদের অবস্থান শুনেছি। এরপর বিষয়টি নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে আমরা কোনো ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা (রিটেলিয়েটরি অ্যাকশন) নিচ্ছি না। ভারতের সঙ্গে আমরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে চাই।”

বাণিজ্য সচিব এই নিষেধাজ্ঞাকে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের জন্যই "ক্ষতিকর" বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সচিব পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

“আমরা বলব, এতে শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হননি, ভারতের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কাজেই চলুন, আমরা বসি এবং একটি সমাধান খুঁজে বের করি। আমাদের একটি বিদ্যমান সেক্রেটারিয়েট পর্যায়ের ফোরাম রয়েছে। সেই বৈঠকের জন্য আমরা গত সপ্তাহে ভারতকে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। চিঠির উত্তর পেলে বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা যাবে।”

বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ এবং ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরা।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার ঘোষণা দেয়, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো ধরনের তৈরি পোশাক ভারতে ঢুকতে পারবে না। কেবল কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের নভি মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু সমুদ্রবন্দর দিয়ে এসব পণ্য প্রবেশের অনুমতি থাকবে।

এছাড়া নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে:

  • ফল ও ফল-স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বোনেটেড ড্রিংকস

  • বেকারি, চিপস, স্ন্যাকস ও কনফেকশনারি পণ্য

  • তুলা ও সুতার ঝুট

  • পিভিসি ও অন্যান্য প্লাস্টিকজাত পণ্য

  • কাঠের তৈরি আসবাবপত্র

ভারতের ঘোষণায় বলা হয়, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের কোনো ‘ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন’ বা ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ (আইসিপি) দিয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী এলসি স্টেশন দিয়েও এসব পণ্য প্রবেশ করতে পারবে না।

এই ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন স্থলবন্দরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে পড়ে। শুধু বেনাপোল স্থলবন্দরে তৈরি পোশাক বোঝাই ৩৬টি ট্রাক আটকা থাকার খবর পাওয়া গেছে।

 

নতুন কাগজ/বিএইচ


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন