‘এই অবস্থায় নিজেকে নিরাপদ মনে করছি না’—‘মুজিব’ সিনেমার অভিনেতা


নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও বিতর্ক। এই প্রসঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার বিষয়টি। ঐতিহাসিক এই চলচ্চিত্রে ‘শেখ হাসিনা’র চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নুসরাত ফারিয়া, আর খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু।
ফারিয়ার গ্রেপ্তারের পর এবার অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুর নামও আলোচনায় এসেছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “নুসরাত ফারিয়াকে যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। সে কেবলমাত্র অভিনয়ের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছে, না কি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে—তা এখনো আমাদের জানা নেই। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে পারি, এই পরিস্থিতিতে আমিও এক ধরনের শঙ্কার মধ্যে আছি।”
২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছিল বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক একটি ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র। ভারতীয় প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় নির্মিত এই যৌথ প্রযোজনার সিনেমাটি শুরু থেকেই ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এতে শেখ হাসিনার তরুণ বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া।
তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ফারিয়াকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে শেখ হাসিনার চরিত্রে তার অভিনয়—যা একসময় প্রশংসিত হয়েছিল—বর্তমানে কিছু মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফলে নুসরাত ফারিয়া নিজেই যেমন বিতর্কে জড়িয়েছেন, তেমনি সিনেমাটির অন্যান্য শিল্পীরাও পড়েছেন নানা জিজ্ঞাসা ও শঙ্কার মুখে।
এই চলচ্চিত্রে নুসরাত ফারিয়া ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অভিনয়শিল্পীরা। খন্দকার মোশতাকের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন ফজলুর রহমান বাবু। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের চরিত্রে ছিলেন নুসরাত ইমরোজ তিশা, আর বঙ্গবন্ধুর পরিণত বয়সে চিত্রায়িত হন অভিনেতা আরিফিন শুভ।
চলচ্চিত্রটিতে আরও অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, দিলারা জামান, সিয়াম আহমেদ, জায়েদ খান, খায়রুল আলম সবুজ, ফেরদৌস আহমেদ, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, গাজী রাকায়েত, তৌকীর আহমেদ ও মিশা সওদাগরের মতো গুণী অভিনয়শিল্পীরা। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও দেশপ্রেমের বার্তায় সমৃদ্ধ এই সিনেমা একসময় জাতীয় গর্ব হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় এর শিল্পীরা পড়েছেন নানা চাপ ও বিতর্কের মুখে।
