সিসি ক্যামেরা, লাইট, আনসার এবং নজরদারির নতুন উদ্যোগ


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং এ এফ রহমান হলের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নিরাপত্তা জোরদারে নেওয়া পদক্ষেপসমূহ: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে ২৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা, আলোকসজ্জার জন্য বসানো হয়েছে ৮৫টি নতুন বাতি নিরাপত্তা, আনসার সদস্যের সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ জন, মাদক ও বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে চুরি রোধে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। শহীদুল্লাহ হলে সাইকেল চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা প্রহরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং গঠন করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি।
মল চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২২ জন নিরাপত্তাকর্মীকে তিন শিফটে ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিফটে ৬-৭ জন কর্মী কাজ করছেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ভ্রাম্যমাণ দোকান ও ভাসমান জনগোষ্ঠী সরানো হয়েছে। উদ্যানের নিরাপত্তায় দুটি স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে—একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এবং অন্যটি পুলিশের।
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থী সাইফ জাওয়াদ সামি জানান, সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর প্রশাসনের দৃশ্যমান তৎপরতা শিক্ষার্থীদের আস্থা বাড়িয়েছে। তবে বহিরাগতদের প্রবেশ আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান তিনি।
সালমান খান, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, ভ্রাম্যমাণ বহিরাগতদের কারণে বিশেষত নারী শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রশাসনের বর্তমান উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও আরও আগেই এই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান আহমেদ জানান, প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শুরু হলেও ভবঘুরে ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের উচ্ছেদে আরও কঠোরতা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, ক্যাম্পাসে এখন ১৩৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, এবং যেগুলো নষ্ট, সেগুলো শিগগির প্রতিস্থাপন করা হবে। বিএনসিসি সদস্যদের প্রক্টরিয়াল টিমে যুক্ত করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে নির্দিষ্ট রিকশা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে, যা বাইরের রিকশার প্রবেশ ঠেকাবে।
এছাড়া ওয়াসার পাইপলাইনের কাজের কারণে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত কিছু রাস্তা পরিবর্তন করে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলা সম্ভব হবে। শিক্ষার্থীরা চান, এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে—তারা আর কোনো সাম্যকে হারাতে চান না।
