প্রতিষ্ঠা ১৬ বছরেও সমাবর্তনের মুখ দেখেনি বেরোবি শিক্ষার্থীরা


প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার হলেও এখনো কোনো সমাবর্তন আয়োজন করা হয়নি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, এ বছরই প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করা হবে।
২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে যাত্রা শুরু করে উচ্চ শিক্ষার এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। পরে নাম বদলে এটি হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও একটি সমাবর্তনও আয়োজিত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী মূল সনদ না পেয়েই পাস করেছেন।
মূল সনদ না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও দাবির প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের জুনে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ সমাবর্তন ছাড়াই মূল সনদ দেওয়ার উদ্যোগ নেন এবং একই বছরের প্রথম কোয়ার্টারে সমাবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে পরে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৮ অগাস্ট উপাচার্য পদ থেকে সরে দাঁড়ান অধ্যাপক রশিদ। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক শওকাত আলী বেরোবির ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন।
সাবেক শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স প্রায় দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও সমাবর্তন না হওয়াটা হতাশাজনক।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বেরোবির মার্কেটিং বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাইজিদ আহমেদ রনি বলেন, “আমার কাছে বেরোবি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, একটা আবেগের জায়গা। আমরা সমাবর্তন ছাড়াই মূল সনদ হাতে পেয়েছি। এটা একটা কষ্টের জায়গা।”
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী স্বপন মাহামুদ বলেন, “সমাবর্তন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি একজন শিক্ষার্থীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। অথচ আমরা এখনো তা পাইনি। একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে বলব- সমাবর্তন, তুমি কোথায়?”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, “প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেও সমাবর্তন হয়নি- এটা অবশ্যই দুঃখজনক। আমরা জেনেছি, বর্তমান উপাচার্য এটি আয়োজন করতে চান। আশা করি, তিনি তা করবেন।”
এ বিষয়ে উপাচার্য মো. শওকাত আলী বলেন, “সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমি এটি আয়োজন করতে আগ্রহী এবং এই বছরই আমরা তা করব। এটি নিয়ে কাজ আগাচ্ছে।”
গাজী আজম হোসেন, বেরোবি
