টানা চার সপ্তাহে তেলের মূল্য পতন, সরবরাহ বাড়ানোর শঙ্কা


বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম টানা চতুর্থ দফায় কমেছে। এপ্রিলের পর এই প্রথমবারের মতো সাপ্তাহিকভাবে তেলের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওপেক প্লাস (OPEC+) জুলাই মাস থেকে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে—এমন খবরে সরবরাহ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।
গত শুক্রবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি দাঁড়ায় ৬৪.১৩ ডলারে, যা আগের দিনের তুলনায় ৩১ সেন্ট বা ০.৫ শতাংশ কম। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুডের দাম কমে আসে ৬০.৮৭ ডলারে, যা ৩৩ সেন্ট বা ০.৫ শতাংশ হ্রাস। সপ্তাহজুড়ে ব্রেন্টের দাম কমেছে ১.৯ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই-এর ২.৫ শতাংশ।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওপেক এবং রাশিয়া সহ মিত্র দেশগুলোর জোট ওপেক+ আগামী ১ জুনের বৈঠকে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনা করছে। যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে বাজার আগেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরবরাহ বৃদ্ধির আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুত বাড়া, এবং ইরানের পারমাণবিক আলোচনা ঘিরে উত্তেজনা—এই তিনটি বিষয় একত্রে বাজারে চাপ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞাও অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।
অন্যদিকে, রোমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পঞ্চম দফার পারমাণবিক আলোচনা শুরু হচ্ছে। এটি সফল হলে ইরানি তেল আবার বৈশ্বিক বাজারে ফিরে আসতে পারে, যা ভবিষ্যতে জ্বালানি বাজারে আরও সরবরাহের চাপ বাড়াতে পারে।
তেল ব্যবহারে চাহিদা স্থির থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রে মহামারিকালীন পরিস্থিতির মতো তেল সংরক্ষণের প্রবণতা বাড়ছে—এটিও বাজারে আস্থার সংকট তৈরি করছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
সূত্র: আরব নিউজ, ব্লুমবার্গ
