প্রবাসী আয়ে টানা রেকর্ড, মে মাসেও রেমিট্যান্সে উর্ধ্বগতি


দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে। হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা কমে আসছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক গতি দেখা যাচ্ছে।
রেকর্ড বলছে, দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে গত মার্চে, আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসেছে এপ্রিলে। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি মে মাসেও নতুন রেকর্ডের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মে মাসের প্রথম ২৪ দিনে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২২৪ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ হাজার ৪০১ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ইতিবাচক প্রবণতা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে স্বস্তি আনতে পারে। সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা উদ্যোগ এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে বলে মত তাদের।
সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স আসছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ ডলার বা ১১৪২ কোটি টাকা। মাসের বাকি দিনগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে নতুন রেকর্ড হতে পারে। অর্থাৎ পুরো মাসে প্রবাসী আয় আসতে পারে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, মে মাসের প্রথম ২৪ দিনে ২২৪ কোটি ৬০ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে একটির (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
চলতি মাসের ২৪ দিনে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটটি। যার মধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স আসে। এরপর আগস্টে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং সবশেষ এপ্রিলে রেমিট্যান্স আসে ২৭৫ কোটি ডলারের।
