ইবিতে অভয়ারণ্যের তৈরি পরিবেশবান্ধব পাটের চটে মোড়ানো ঈদের চিঠি


বাংলাদেশের কুষ্টিয়াতে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অভয়ারণ্য' তৈরি করেছে পরিবেশবান্ধব হাতে লেখা পাটের চটে মোড়ানো ঈদের চিঠি।
বর্তমান, প্রজন্মের কাছে ঈদের চিঠি আদানপ্রদান প্রায়ই অচেনা একটি বিষয়। তবে ৯০ দশকে যারা বেড়ে উঠেছেন কিংবা শৈশব পার করেছেন। তাদের কাছে ঈদের চিঠি আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসা বিনিময়ের সুন্দরতম স্মৃতি হিসেবে পরিচিত ছিলো। তবে এবার এমন সংস্কৃতি, মমতা আর আন্তরিকতার স্পর্শে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অভয়ারণ্য' তৈরি করেছে পরিবেশবান্ধব ঈদের চিঠি। এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ মুগ্ধ করেছে ক্যাম্পাসের অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষার্থীকে।
আবেগ কিংবা অনুভূতি আদান-প্রদান অনেকটাই যন্ত্রনির্ভর। প্রযুক্তির কল্যাণে খুব সহজে মানুষের কাছে এসকল শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেয়া যায়।
তবে এ সকল প্রযুক্তির সাথে পুরোনো দিনের সেই হাতে লেখা কলমের আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা আবেগ অনুভূতির তুলনা করা যায় না। এ সকল চিঠির মধ্যে প্রাণের টান বা মনের ভালো লাগার বিষয়গুলো জড়িয়ে ছিলো। যা প্রযুক্তির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে তেমন ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
একজন জানায়, এবারের ঈদের কার্ডটি সংগঠনটি তৈরি করেছে কাপড়ের ওপরে লিখে, পাটের চট দিয়ে ফ্রেম বানিয়ে এবং সুতা দিয়ে হাতে সেলাই করে। যার মাধ্যমে পুরনো দিনের চিঠির একটা উষ্ণতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সময়ের পালা বদলে ভাব বিনিময়ের মাধ্যম বদলায়। কিন্তু অনুভূতিগুলো থেকে যায় একই। তাই তো নিজেদের ফেলে আসা সোনালি অতীত এখন সুখস্মৃতি হয়ে বেঁচে আছে কয়েক প্রজন্মের বুকে। এখনো যদি এ যান্ত্রিক মাধ্যমের পাশাপাশি এগুলো চালু রাখা যায়, তাহলে নতুন প্রজন্ম আগের মতো সেই আত্মিক অনুভূতির স্বাদ পাবে বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।
অভয়ারণ্যের থেকে চিঠি পাওয়া শিক্ষার্থী আলী আহসান মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, যান্ত্রিকার শহরে এমন হাতে লেখা পাটের চটে মোড়ানো একটা চিঠি এক নিমিষে মন ভালো করতে বাধ্য।
আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, কালের বিবর্তনে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে এখন আর কেউ কাউকে চিঠি লেখে না। সামাজিক যোগাযোগ যেমন ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন অ্যাপসে দু-চার লাইনে শুভেচ্ছা জানায়। কিন্তু চিঠির সেই আবেদন এগুলোতে পাওয়া যায় না। অভয়ারণ্যের এমন উদ্যোগ সত্যি মন ছুয়ে যায়।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি নাঈমুল ফারাবি বলেন, এ বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে আমরা ব্যতিক্রমি ঈদকার্ডের মাধ্যমে একটুখানি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এ যান্ত্রিক সময়ে একটুখানি মন ছুঁয়ে যাওয়া, যেন কেউ অনুভব করে তার জন্যে কোমল স্পর্শে একটুখানি ভালোবাসা উপহার দেয়া হয়েছে।
নাজমুল হুসাইন,
