আপিল বিভাগে জামায়াতের জয়, রাজনৈতিক নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে দলটি


জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া রাজনৈতিক নিবন্ধন পুনর্বহাল করতে হবে বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রায়ে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাতিল হওয়া নিবন্ধন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। তবে দলটির পুরোনো প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আদালত কোনো নির্দেশনা দেননি। প্রতীক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই রায়ে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের দেওয়া জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আদেশ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন কার্যত বাতিল হয়ে গেল। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে অকার্যকর ঘোষণা করে জামায়াতের পক্ষে রায় দেন।
আদালতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, শিশির মনির, নাজিব মোমেন এবং মীর আহমেদ বিন কাশেম। শুনানিকালে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর জামায়াতের খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। এরপর ১২ মার্চ থেকে শুনানি শুরু হয় এবং ১৪ মে শুনানি শেষ হয়। ১ জুন রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্টের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়, যা ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন আকারে কার্যকর করে নির্বাচন কমিশন। পরে জামায়াত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে, তবে ২০২৩ সালে প্রধান আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় আপিল বিভাগ তা 'ডিসমিস ফর ডিফল্ট' হিসেবে খারিজ করে দেয়। এরপর আপিল পুনরুজ্জীবিত করে পুনরায় শুনানির সুযোগ পায় দলটি।
এদিকে, ২০২৩ সালের আগস্টে সরকারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হলেও, একই বছরের ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
