সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০ করার পক্ষে বিএনপি


সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তবে আপাতত এসব আসনে সরাসরি ভোট নয়, দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব চায় দলটি।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার রাজনৈতিক সংলাপে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে বিকেলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দলের অবস্থান তুলে ধরেন।
বিএনপি মনে করে, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের জন্য এখনও উপযুক্ত সময় আসেনি। দলটি চায়, বর্তমানে চালু থাকা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতেই নির্বাচন অব্যাহত থাকুক।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসন ৫০টি। আমাদের পক্ষ থেকে আরও ৫০টি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত হয়েছে। তবে কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে সরাসরি ভোট বা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতির বিষয়ে যেসব প্রস্তাব এসেছে, তা আমাদের রাজনৈতিক ও সংসদীয় সংস্কৃতির সঙ্গে এখনো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে আমরা মনে করি। এজন্য প্রয়োজন আরও সময় ও অনুশীলন।”
বিএনপি নেতার মতে, দেশের নারী সমাজ এখনো কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে পুরোপুরি পৌঁছায়নি। তাই নারীকে এগিয়ে নিতে সংরক্ষিত আসনের মতো বিশেষ বিধান বজায় রাখা প্রয়োজন।
ব্রিফিংয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে দুপুরের পর সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও সংরক্ষিত নারী আসন—এই দুটি বিষয় নিয়ে মূলত আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়নি।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, “কমিটির সভাপতির পদ বিরোধী দলীয় সদস্যদের দিতে পারা যায় কি না—সেই প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। আমরা চাই, সংসদে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ বিরোধী দলকে দেওয়া হোক।”
তবে তিনি জানান, কোন মন্ত্রণালয়ের কমিটি বিরোধী দলকে দেওয়া হবে, বা সংখ্যা কত হবে—তা এখনই নির্ধারণ হয়নি। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের ভবিষ্যৎ আলোচনার ওপর নির্ভর করবে। বিরোধী দলের আকার এবং সদস্যসংখ্যাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য হবে।
এর আগে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সংসদীয় সংস্কার, নারী প্রতিনিধিত্ব, এবং নির্বাচনব্যবস্থা সংক্রান্ত একাধিক সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপি, এবং আরও ২৮টি রাজনৈতিক দল ও দুটি জোট অংশ নেয়।
এন কে/বিএইচ/বা জা
