রাজধানীতে নেই চির চেনা জ্যাম, ফাঁকা রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা


ঢাকা শহরের চিরচেনা দৃশ্য—গাড়ির দীর্ঘ সারি, ক্লান্ত যাত্রীরা, কর্ণভেদী হর্ণ আর থেমে থেমে চলা যানবাহন। এসব যেন হঠাৎ করেই উধাও। রাজধানীর রাস্তাগুলো এখন বেশ ফাঁকা, যানজট যেন কোনও হারিয়ে যাওয়া গল্প। ঈদের ছুটিতে নগরবাসীর বড় একটি অংশ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়ায় রাজধানীতে সৃষ্টি হয়েছে এক ভিন্নধর্মী পরিবেশ।
অটোরিকশার রাজত্ব: এমন সুযোগে রাস্তায় যেন আধিপত্য বিস্তার করেছে অটোরিকশাগুলো। প্রতিদিন হাজারো যাত্রীকে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকতে হতো, সেখানে এখন মাত্র কয়েক মিনিটেই পৌঁছানো যাচ্ছে গন্তব্যে। ফাঁকা রাস্তায় অটোরিকশাগুলো স্বচ্ছন্দে চলাচল করছে, যেন রাজধানীর রাজা তারা।
নিউ মার্কেট, ফার্মগেট, গুলিস্তান, মিরপুর কিংবা মোহাম্মদপুর—প্রতিটি এলাকাতেই দেখা গেছে একই চিত্র। চালকেরাও বেশ স্বস্তিতে রয়েছেন। একজন চালক জানান, "সারা বছরই আমরা জ্যামের মধ্যে থাকি। এখন রাস্তা ফাঁকা, তাই দ্রুত ভাড়া মারতে পারছি। দিনে যাত্রীও কম, তবে আয় খারাপ না।"
এখন যারা ঢাকায় অবস্থান করছেন, তারা বেশ খুশি এই স্বস্তিদায়ক পরিবেশে। এক যাত্রী বলেন, “এমন ফাঁকা ঢাকা শুধু ঈদের সময়ই দেখা যায়। কোথাও যেতে ভয় নেই, সময়ও কম লাগে।" ভ্রমণপিপাসুদের জন্যও এই সময়টা যেন এক সুবর্ণ সুযোগ। পরিবার-পরিজন নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যেতে পারছেন তারা সহজেই, কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।
যদিও অনেকেই এই স্বস্তিকে উপভোগ করছেন, তবে প্রশ্ন উঠছে—এই শহর যদি কিছুটা পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হতো, তবে সারা বছরই কি এমনটা সম্ভব ছিল না? যানজট যে শুধু গাড়ির সংখ্যা বাড়ার জন্য হয় না, বরং শহর ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব তার অন্যতম কারণ—তা আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ঢাকার এই ফাঁকা রূপ হয়তো বেশি দিন স্থায়ী হবে না। ছুটি শেষে আবারও ফিরে আসবে পুরোনো চিত্র। তবে এই কয়েকটা দিন যেন রাজধানীর জন্য এক প্রশান্তির নিঃশ্বাস। নগরবাসী এবং চালক—উভয়ের কাছেই এই সময়টা স্বস্তির, যেন এক ক্ষণিকের অবকাশ।
এন কে/বিএইচ
