আইনের শাসন ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়


বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিশ্বব্যাপী, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ইউএনডিপির আয়োজিত ২৫তম বার্ষিক "রুল অব ল" সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায্য বিচার নিশ্চিতকরণ এবং মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের কাজ এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। যখন ন্যায়বিচার অনুপস্থিত থাকে, তখন তা রাস্তায় প্রতিফলিত হয়।
প্রধান বিচারপতি জাতিসংঘের ২০২৪ সালের “ভবিষ্যতের চুক্তি” এর আলোকে বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বিচার বিভাগের সংস্কার অপরিহার্য।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে বিচার বিভাগীয় সংস্কারে একটি রূপান্তরমূলক এজেন্ডা বাস্তবায়িত হচ্ছে। বিচার বিভাগের প্রতি অবিশ্বাস ও মামলার জটের বাস্তবতা সত্ত্বেও, জনগণের ন্যায়বিচার চাহিদা পূরণই সংস্কারের মূল চালিকাশক্তি।
তিনি আরও জানান, ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনের সহযোগিতায় একটি স্বচ্ছ, স্বাধীন ও প্রযুক্তিনির্ভর বিচার ব্যবস্থা গঠনে কাজ চলছে। ডিজিটাল রূপান্তর ও আন্তর্জাতিক মানে বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলাই এই রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ট্রানজিশনাল জাস্টিস বিষয়ে মতবিনিময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের রূপান্তর ছাড়া গণতন্ত্র, শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব নয়।
উপসংহারে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে সর্বাগ্রে স্বৈরাচারী হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কার প্রচেষ্টা একদিন পরিবর্তনের বৈশ্বিক উদাহরণ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
