শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj
রাজধানীর বনানী

অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক সোর্স শহিদ

অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রক সোর্স শহিদ
ছবি : সোর্স শহিদ ও তার গ্যাংয়ের সদস্যরা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

রাজধানীর বনানীতে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে র‌্যাব ও পুলিশের সোর্স পরিচয়দানকারী শহিদ (৩৬)। কখনও র‌্যাব, কখনও পুলিশ, কখনও ডিবি’র সোর্স পরিচয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। ফুটপাতের দোকানি থেকে শুরু করে গাড়ির গ্যারেজ ও ভাঙারি দোকান থেকে করছে চাঁদাবাজি। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। 

বনানীর বস্তি এলাকাগুলোর দোকানি ও ভুক্তভোগীদের কাছে এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম সোর্স শহিদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেও বহাল তবিয়তে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ এবং অপরাধ জগতের অঘোষিত নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন সোর্স শহিদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, র‌্যাব ও পুলিশের সোর্স পরিচয়ে শহিদের শেল্টারে বনানী ২ নাম্বার রোড, এরশাদ নগর, বেলতলা, বেদে বস্তিসহ অসংখ্য স্পটে চলছে মাদক ব্যবসা। তাদের এই মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে বাধাদানকারীকে নিয়ে চলে ষড়যন্ত্র। কখনও র‌্যাব, কখনও ডিবি, কখনও পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি ও মিথ্যা মামলা আবার কখনও মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়।

সূত্রে জানা যায়, র‌্যাব, ডিবি ও পুলিশের কতিপয় সদস্যদের সাথে সোর্স শহিদের ভালো সখ্যতা থাকায় বুক ফুলিয়ে বীরদর্পে তার বাহিনীর মাধ্যমে রমরমা মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার গ্রুপে রয়েছে, সাগর, মুন্না, ফর্মা হারুন, মফিজ, স্বপন সহ অনেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বনানী এলাকায় মাদক ব্যবসার পাইকারি মহাজন সোর্স শহিদ। মাদক ব্যবসায় গড়ে তুলেছে ভয়ংকর এক সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা কার কাছ থেকে মাল কিনবে, কে কোথায় বিক্রি করবে সব নির্ধারণ করে দেন শহিদ। বনানীর মাদক ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে তার মাধ্যমেই নিতে হবে। যারা তার সিন্ডিকেটে নাম লেখায় না তারাই গ্রেফতার হয়। যারা এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত, তারা থানার অভিযানের তথ্য সব আগে থেকেই জেনে যায় এবং সটকে পড়ে। এমনকি থানায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জব্দ করা মাদকের অংশ শহিদের মধ্যস্থতায় আবার বিক্রি হয় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। 

অন্যদিকে শহিদের মাদক ব্যবসায় কেউ প্রতিবাদ করলে অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতিবাদকারীকেই মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে মামলা দেওয়া হয়, বাদ যায় না সাংবাদিকরাও। সংবাদ প্রকাশের জেরে স্থানীয় অনেক সাংবাদিককে ক্ষমতার বলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। 

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারোয়ার বলেন, মাদক ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। অপরাধীদের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। মাদকের সাথে জড়িত সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ রয়েছে। বনানী থানা পুলিশের কোন সোর্স নেই বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গুলশান জোন) মো. আল আমিন হোসাইন বলেন, চাঁদাবাজ ও মাদকের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। পুলিশ বা ডিবি পুলিশের কোনো সোর্স নেই। কেউ পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চললে, তাকে আমরা ছাড় দেব না। তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।


সাইফ/বনানী/আহমেদ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন