জকিগঞ্জে নেই পত্রিকা সরবরাহ, পাঠক হতাশ


সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে পাঠক, সংবাদকর্মী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের প্রিন্ট পত্রিকা পাঠ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলার মানুষ এখন ই-পেপার ও অনলাইনের উপর নির্ভরশীল হলেও সরকারি বিজ্ঞাপন, তথ্য, আদালতের কপি ও নানা দাফতরিক প্রয়োজনে এখনও প্রিন্ট সংস্করণের প্রয়োজন পড়ে।
জানা গেছে, সিলেট জেলা শহর থেকে প্রায় ৯১ কিলোমিটার দূরের জকিগঞ্জে প্রায় ৩ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। এখানে দেশের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় ব্যতিক্রমভাবে রয়েছে আদালত ও ব্যবসাকেন্দ্রিক প্রাণচাঞ্চল্য। অথচ দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকা সরবরাহ না থাকায় সাধারণ মানুষ বঞ্চনার শিকার।
পূর্বে পত্রিকা সরবরাহ করতেন জামিল আহমদ। তিনি বলেন, “অনেক চেষ্টা করেও পত্রিকা বিক্রি করে টিকতে পারিনি। লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হতো, তাই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই।”
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা বিষয়টি জানি। কেউ যদি নতুনভাবে দায়িত্ব নিতে চান, তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে। আমরা চাই জকিগঞ্জে দ্রুত পত্রিকা সরবরাহ শুরু হোক।”
জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব লায়েক বলেন, “আমরা নিয়মিত জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রেরণ করি। কিন্তু পাঠকের হাতে প্রিন্ট পত্রিকা না পৌঁছানোয় এর প্রভাব পড়ে। অবিলম্বে একজন দায়িত্বশীল এজেন্ট নিয়োগ জরুরি।” সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পত্রিকা পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে প্রিন্ট সংস্করণ হাতে পৌঁছাতে হবে। নতুন কেউ এগিয়ে এলে সমাজ উপকৃত হবে।”
জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “পত্রিকা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। নিয়মিত সরবরাহ বন্ধ থাকলে অনেকেই পিছিয়ে পড়ে। প্রশাসন, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে সমস্যার সমাধান করা দরকার।” তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জকিগঞ্জ সার্কেল ইয়াহিয়া আল-মামুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম মিতু দায়িত্বে থাকাকালীন পত্রিকা সচল করতে উদ্যোগ নিলেও তা স্থায়ী হয়নি।
স্থানীয় সাংবাদিকরা মনে করেন, নতুন কেউ দায়িত্ব নিলে পত্রিকা সরবরাহ আবারও সচল করা সম্ভব। জকিগঞ্জের পাঠকরা সে আশাতেই আছেন।
দৈএনকে/জে .আ
