শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

৩৬২ বছরের পুরনো রহস্যময় আরিফাইল মসজিদ

৩৬২ বছরের পুরনো রহস্যময় আরিফাইল মসজিদ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার আরিফাইল মসজিদ। ৩৬২ বছরের পুরনো এই মসজিদটি মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অপূর্ব প্রকাশ এবং রহস্যময় কাহিনির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

অনুমান করা হয়, ১৬৬২ সালে দরবেশ শাহ আরিফ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন, আর তার নামেই এর পরিচয় গড়ে ওঠে ‘আরিফাইল মসজিদ’। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি বারোভূঁইয়ার অন্যতম শাসক ঈশা খাঁর শাসনামলে তৈরি হয়েছিল। তবে প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে, যা মসজিদটির রহস্যময়তাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

মসজিদের পাশেই রয়েছে দুটি কবর, যা স্থানীয়দের কাছে ‘জোড়া কবর’ নামে পরিচিত। কেউ কেউ মনে করেন, এটি ঈশা খাঁর দুই স্ত্রীর সমাধি, তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রহস্যময় এই কবর নিয়ে বহু কল্পকাহিনি প্রচলিত, যা দর্শনার্থীদের কৌতূহলী করে তোলে।

মুঘল স্থাপত্যের অনন্য দৃষ্টান্ত এই মসজিদটি ৮০ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রশস্ত। এর চার কোণায় সুউচ্চ বুরুজ (মিনার) এবং তিনটি গম্বুজ রয়েছে, যেগুলোর প্রতিটিতে পদ্মফুলের নকশা খোদাই করা। ভেতরের শব্দ প্রতিধ্বনিত হওয়ার কারণে অনেকে এটিকে অলৌকিক বলে মনে করেন, যদিও এটি মূলত স্থাপত্যশৈলীর বৈশিষ্ট্য।

মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি বিশাল দীঘি, যা একসময় রোগমুক্তির উৎস হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রতিদিন এখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হয়, আর জুমার দিনে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়।

বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটিকে সংরক্ষিত প্রত্নসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিঃসন্দেহে ইতিহাসপ্রেমী ও পর্যটকদের জন্য এক অনন্য আকর্ষণ।

সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আরিফাইল মসজিদ ইতিহাস, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও রহস্যময়তার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ।


নতুন/কাগজ/হানিফ/ব্রাহ্মণবাড়িয়া
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন