শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত হলো গৌরীপুরের ইয়াসিন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত হলো গৌরীপুরের ইয়াসিন
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

ছোট থেকেই সেনাবাহিনীতে চাকরি করার স্বপ্ন ছিলো ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের যুবক ইয়াসিন শেখের। নানা চেষ্টায় দেশে সে স্বপ্ন পূরণ না হলেও রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যোগদান করে তার স্বপ্ন পূরণ হয়। তবে দুর্ভাগ্যবশত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণের পর ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় নিহত হন ইয়াসিন।  

গত ২৭ মার্চ ইউক্রেনে যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হন ইয়াসিন শেখ। তবে তার মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে পৌঁছায় ১ এপ্রিল, প্রায় এক সপ্তাহ পরে। মৃত্যুর খবরটি জানায় রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের বন্ধু মেহেদী।  

এ খবর জানার পর থেকে ইয়াসিনের পরিবারে শোকের মাতম চলছে। এলাকার মধ্যে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। 

 
ইয়াসিন শেখ উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মরিচালি গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার মীরের ছোট ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে দু’জন আগেই মারা গেছেন, এখন মা এবং বড় ভাই রুহুল আমিনের সঙ্গে তারা সংসার চালাতেন। বড় ভাই ব্যবসায়ী রুহুল আমিন তার পড়াশোনা ও বিদেশযাত্রার খরচ বহন করতেন।  

৩ এপ্রিল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মা ফিরোজা খাতুন ছেলের ছবি নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তিনি কেঁদে কেঁদে ছেলের মরদেহ ফিরে পেতে প্রার্থনা করছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও শোকে কাতর।  

ঘটনার খবর পেয়ে গৌরীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা মরিচালি গ্রামে গিয়ে ইয়াসিনের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।  

ইয়াসিনের চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম রবি জানান, রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে রাশিয়ান ভাষা শেখেন ইয়াসিন। পরে বন্ধুর সহায়তায় গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ায় একটি কোম্পানিতে চাকরি পান। সেখানে কর্মরত অবস্থায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যোগদানের সুযোগ পান এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।  

রাশিয়ায় যাওয়ার সময় ইয়াসিনের মা ও বড় ভাইকে গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে তাদের অনাপত্তিপত্রে স্বাক্ষর করান রাশিয়ায় পাঠানো এজেন্সির লোকজন। ২৬ মার্চ, ইয়াসিন তার মায়ের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেন এবং কিছুদিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা পাঠানোর কথা জানান।  

নিহতের মরদেহ কীভাবে দেশে আনা হবে, তা জানে না পরিবারের সদস্যরা।  

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হাসান জানান, বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সকল প্রকার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবো। আমরা চাই পরিবারটি যেন তাদের সন্তানের মরদেহ দেশে এনে দাফন করতে পারে।  


নতুন/কাগজ/সফিক/ময়মনসিংহ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন