নবগঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল


নীলফামারীর ডিমলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন প্রকৃত আন্দোলনকারীদের একটি অংশ।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) শেষ বিকেলে ডিমলা বিজয় চত্বরে থেকে প্রকৃত আন্দোলনকারীদের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্মৃতি অম্লান চত্বরে ফিরে ঘণ্টাব্যাপী সেখানেও বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ডিমলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ নুপুর আক্তার, রাব্বি ইসলাম, সুজন ইসলাম, ফয়জুর রহমান ফয়েজ, রানা ইসলামসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নীলফামারী জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়া ডিমলার কতিপয় ব্যক্তি জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য সংস্কারের কথা বলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বিভিন্ন দপ্তরে চাঁদাবাজি ও চাঁদা দাবি করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ঈদ সালামির সাথে চালের স্লিপ চাচ্ছেন, ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন করে নাম চাচ্ছেন। ঈদের আগে ভিজিএফ চাল বিতরণ বন্ধ করে অসহায় মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করেছিলেন। তারা যে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব করে বেড়াচ্ছেন, এই ক্ষমতা কি সরকার তাদের দিয়েছেন?
"ঠিকাদারির লাইসেন্স চাচ্ছেন, চাঁদাবাজির লাইসেন্স চাচ্ছেন। আর তাদেরই বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন ডিমলার ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা)। তাদেরকে কেনো সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে? তারা আপনার টেবিলে থাপ্পর মেরে কথা বলার সাহস পায় কোথা থেকে? ডিমলার মাটিতে এ ধরণের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া হবে না," বলেন তারা।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিলেন, তা মনে করিয়ে দিয়ে তারা সাফ জানিয়ে দেন, এটি কারো বাপ-দাদার একক সম্পত্তি নয়। এ সময় তারা বলেন, প্রকৃত ছাত্র আন্দোলনের আদর্শের সাথে বেঈমানি করে গত ৩ এপ্রিল দেওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ডিমলা উপজেলার চারশত সদস্যের ভুয়া কমিটি তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। ইতিমধ্যে প্রহসনের সেই কমিটিতে নাম থাকা অনেকেই ধিক্কার জানিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। প্রকৃত আন্দোলনকারীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এই কমিটি করা হয়েছে বলে দাবি করে তারা আরও বলেন, "আমাদের রক্ত, ঘাম ঝড়িয়ে আদায় করা আন্দোলনকে পুঁজি করে কেউ যদি ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।"
প্রকৃত ছাত্র নেতৃত্বের অধীনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই ভুয়া কমিটি বাতিল করতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয়দানকারী চাঁদাবাজদের প্রশ্রয় না দিতে প্রশাসনসহ সকলকে আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ডিমলা উপজেলার চারশত বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেওয়া হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। কমিটি ঘোষণার পর পরই তাতে নাম থাকা বিভিন্ন পদের একাধিক নেতা স্বেচ্ছায় পদত্যাগের কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
