ছাত্রদের রক্তের বিনিময়েই আজ রাজনীতিবিদরা বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারছে: সারজিস আলম


“বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা আজ বুক ফুলিয়ে কথা বলছেন, তারা যেন না ভুলে যান—এই অবস্থানে পৌঁছাতে ছাত্রদের অসংখ্য রক্ত ঝরেছে, আত্মত্যাগ হয়েছে। তাদের কারণেই আজ এই মানুষগুলো নিরাপদে রাজনীতি করতে পারছে”—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন ইকো পার্কে আয়োজিত "মাশরুম ও মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা" অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, “সম্প্রতি ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। আমরা মনে করি, ভারত রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করবে। আর রাষ্ট্র হিসেবে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে তা বজায় রাখার নৈতিকতা তাদেরই থাকা উচিত।”
বিএনপির শামসুজ্জামান দুদুর সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তিনি বলেন, “ওটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত মতামত, দলের নয়। আমরা তাদের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে দেখি। কিন্তু তারা যদি অনুজদের সামনে প্রতিহিংসার রাজনীতি ফিরিয়ে আনেন, তাহলে তা হবে অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি। যেমন একসময় শেখ হাসিনা, ড. ইউনুস ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে যেভাবে কথা বলা হতো—এ ধরনের সংস্কৃতি রাজনীতিকে ধ্বংস করে।”
তিনি আরও বলেন, “লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে—এটি একেবারে ঠিক নয়। কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ছাত্ররা এখনো সংগ্রাম করছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যতবারই পরিবর্তন এসেছে, তার পেছনে ছাত্রদের রক্ত, আন্দোলন ও আত্মত্যাগ রয়েছে। তারাই এই সমাজ ও রাজনীতিকে গঠন করেছে।”
বাংলা নববর্ষ নিয়ে সারজিস বলেন, “আমরা যেন শো-অফের জন্য বাইরের অপসংস্কৃতিকে নিজেদের সংস্কৃতির অংশ না বানাই। কারও সংস্কৃতি অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চর্চা থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং আমাদের সবার সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।”
মাশরুম ও মুক্তা চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চিরাচরিত কৃষিকাজে কৃষকরা এখন অনেকটাই নিরুৎসাহিত। সেখানে না আছে পর্যাপ্ত আয়, না আছে নিশ্চয়তা। তাই কৃষির বিকল্প হিসেবে মাশরুম ও মুক্তা চাষ নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। এটি শুধু লাভজনক নয়, বরং দেশের অর্থনীতির জন্যও কার্যকর।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন, প্রশিক্ষক ড. নজরুল ইসলামসহ প্রশিক্ষণার্থীরা।
নতুন/কাগজ/লাবলু/পঞ্চগড়
