শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

উল্লাপাড়ায় ধ্বংসের পথে উদ্যোগে গড়া বিদ্যালয়, পাঠদান বন্ধ ছয় বছর

উল্লাপাড়ায় ধ্বংসের পথে উদ্যোগে গড়া বিদ্যালয়, পাঠদান বন্ধ ছয় বছর
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বাখুয়া গ্রামে স্থানীয় উদ্যোগে গড়ে ওঠা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বর্তমানে ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ছয় বছর ধরে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়টি এখন পরিত্যক্ত। টিনের চাল ভেঙে পড়ছে, বেড়াগুলো ক্ষয়ে গেছে, আর চারপাশে শুধু ধ্বংসের চিহ্ন।

২০০৮ সালে বাখুয়া গ্রামের কারিগর পাড়ায় (ছোট বাখুয়া) এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে চারজন শিক্ষক নিয়ে শুরু হয় পাঠদান। কারিগর পাড়া, মিস্ত্রী পাড়া ও মিল পাড়ার শিক্ষার্থীরা নিয়মিত এই বিদ্যালয়ে যেত। ২০১২ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়টি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং উপজেলা শিক্ষা বিভাগ থেকে বই সরবরাহও করা হতো।

তবে, রেজিস্ট্রেশন ও জাতীয়করণের জন্য ২০১২ সালে আবেদন করা হলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিদ্যালয়টি ধীরে ধীরে অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং শেষ ছয় বছর ধরে তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।

বাখুয়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার বসতি পরিবার এবং প্রায় পাঁচ হাজার ভোটার রয়েছে। গ্রামের দশটি পাড়ার মধ্যে মিল পাড়া, ফকির পাড়া, ডাক্তার পাড়া, কারিগর পাড়া ও মিস্ত্রী পাড়ার পরিবারগুলো এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে থাকায় মূল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত শিশুদের জন্য কষ্টসাধ্য। এ পাঁচটি পাড়ায় বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ শতাংশ।

এক সময়ের প্রাণচঞ্চল এই বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে মিল পাড়া, ফকির পাড়া ও ডাক্তার পাড়ার শিশুদের কেউ কেউ পাশের নাগরৌহা গ্রামের সরকারি বিদ্যালয়ে, আর কারিগর পাড়া ও মিস্ত্রী পাড়ার শিশুরা দেড় কিলোমিটার দূরে বাখুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। মিল পাড়ায় একটি কেজি স্কুল চালু হলেও সেটি সকলের জন্য পর্যাপ্ত নয়।

এলাকাবাসীর দাবি, বিদ্যালয়টি পুনরায় চালু করা গেলে অন্তত আশেপাশের পাড়ার শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অনেক সহজ ও সাশ্রয়ী হবে। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, এটি তাদের দীর্ঘদিনের দাবি হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, “বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের সুযোগ রয়েছে। তবে সরকারের নীতিমালার বাইরে গিয়ে নতুন করে বিদ্যালয় খোলার নিয়ম নেই।”

স্থানীয়রা মনে করেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে বা উপযুক্ত নজরদারির মাধ্যমে পুরনো এ উদ্যোগ আবারো শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়াতে পারে।


নতুন/কাগজ/সাহারুল/সিরাজগঞ্জ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন