বৈশাখে মলিন ইলিশ, চুয়াডাঙ্গা বাজারে চাহিদার খরা


বাংলা নববর্ষ কেবল একটি দিন নয়, এটি বাঙালির আত্মপরিচয়, ঐতিহ্য আর আবেগের মিলনমেলা। এই দিনে "পান্তা-ইলিশ" যেন হয়ে উঠেছে এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। কিন্তু এবার পয়লা বৈশাখে চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে দেখা গেছে ব্যতিক্রমী চিত্র—ইলিশ থাকলেও নেই ক্রেতা।
বৈশাখের আগের দিন (১৩ এপ্রিল) বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, হাতে গোনা মাত্র চারজন মাছ বিক্রেতা তাদের দোকানে ইলিশ সাজিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেই ইলিশ যেন ক্রেতাহীন নিঃসঙ্গ। বাজারে আসা ক্রেতারা মাছ দেখেই ফিরে যাচ্ছেন। এমনকি বৈশাখের সকালে, যেখানে অন্যান্য বছর ইলিশ বিক্রির ধুম পড়ে, এবার সেখানে ছায়া পড়েছে মলিনতা।
ব্যবসায়ী সাহেব আলী জানান, “গত দশ বছর ধরে বৈশাখের আগে ইলিশ বিক্রি করছি। অন্যান্য বছর একদিনেই ২০-৩০ কেজি বিক্রি হতো। এবার দাম কমিয়ে দিয়েছি—৭০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে—তবু সাড়া নেই।”
ক্রেতা শাহারিয়ার হোসেন বললেন, “প্রতি বছর পান্তা-ইলিশ খাই, এটা যেন রীতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এবার বাজারে ইলিশও কম, আর দামও বেশি। মাঝারি সাইজের একটা ইলিশের দাম বলছে ১২০০ টাকা কেজি—সেটা বহন করা কঠিন।”
বাজারে আসা শিউলি আক্তার নামের এক চাকরিজীবী বলেন, “আজ ছুটির দিন, স্পেশাল রান্না করবো। তবে পান্তা-ইলিশে আমাদের আগ্রহ কম। বাচ্চারাও চায় না। তাই এবার আর আয়োজন করিনি।”
পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশের ঐতিহ্য থাকলেও বাস্তবতা বলছে—চাহিদার খরা আর ব্যয়ের হিসেব মিলছে না অনেকের। ইলিশ যেন বৈশাখে এসেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
