শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

চরের নারীদের কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক

চরের নারীদের কর্মসংস্থানে এগিয়ে আসছেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের নারীদের জীবনে পরিবর্তন আনতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা। নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ ও স্বনির্ভরতা অর্জনে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা বৃদ্ধির এই প্রচেষ্টা এলাকাবাসীর মাঝে আশার আলো জাগিয়েছে।

চর যাত্রাপুরের আরডিআরএস ফেডারেশনে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণী অংশ নেয়। ২০ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী নারীদের নকশিকাঁথা, হস্ত ও কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে হাতে-কলমে শেখানো হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা শুনে জেলা প্রশাসক নগদ অর্থসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

গত রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে নগদ অর্থ তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ সাঈদা পারভীন, যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল গফুর, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু, জুয়েল রানা, ফজলুল করিম ফারাজীসহ অনেকে।

প্রশিক্ষণার্থী ফাহমিদা পারভীন বলেন, "আমি স্নাতকে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, তবে আমার স্বপ্ন নার্সিং পেশায় যুক্ত হওয়া। জেলা প্রশাসক স্যারের কাছ থেকে আমি নার্সিংয়ে ভর্তি হওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। যদি সহযোগিতা পাই, তাহলে আমিও চরের মানুষদের পাশে থেকে সামাজিক উন্নয়নের অংশ হতে চাই।"

অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সাংবাদিক সাইয়েদ আহমেদ বাবু বলেন, "চরের অবহেলিত মানুষদের ভাগ্য বদলে দিতে যে কাজগুলো করছেন জেলা প্রশাসক, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বিশেষ করে নারীদের দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে তিনি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথ তৈরি করছেন।"

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, "গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। চরাঞ্চলে প্রচুর সম্ভাবনাময় ও মেধাবী মানুষ রয়েছে। তাদের সৃজনশীলতা ও চিন্তা-শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। ইতোমধ্যেই আমরা চরাঞ্চল থেকে চারজন নারীকে বিদেশে পাঠিয়েছি, এবং ৩০ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের পথ দেখিয়েছি। শহর আর চরের মধ্যে কোনো বৈষম্য রাখতে চাই না। চরাঞ্চলের মানুষগুলো যেন সম্মানের সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।"

এই উদ্যোগের মাধ্যমে কুড়িগ্রামে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। চরাঞ্চলের নারীরা আর পিছিয়ে নেই, বরং তারা এখন এগিয়ে চলেছে স্বপ্ন ছুঁতে। প্রশাসনের সহায়তা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা হয়ে উঠছে স্বাবলম্বী ও আত্মপ্রত্যয়ী, যা এক নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন