হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধীদের অশালীন আচরণের প্রতিবাদ চিকিৎসকদের

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করে অশোভন ও হুমকিমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার দুপুরে হাসপাতালের মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এবং ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) যৌথভাবে এ অভিযোগ উত্থাপন করে।

তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ, ড্যাবের জেলা সভাপতি ডা. ময়েজ উদ্দিন, এনডিএফ সভাপতি ডা. মহিউদ্দীন এবং কনসালট্যান্ট ডা. ইসমাইল হোসেন বক্তব্য দেন এ সম্মেলনে।

ডা. ময়েজ উদ্দিন জানান, ৩০ এপ্রিল ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশ করে বিনা অনুমতিতে হাসপাতালের বায়োমেট্রিক ডাটা (ফিঙ্গারপ্রিন্টের হার্ড ও সফট কপি) দাবি করেন। তথ্য অধিকার আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে তারা উত্তেজিত আচরণ করেন এবং এক পর্যায়ে ডা. ইসমাইল হোসেনকে হুমকি দিয়ে অপমান করেন।

চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই ধরনের আচরণ শুধুই হাসপাতালের নিয়ম ভঙ্গ নয়, বরং চিকিৎসক সমাজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানির শামিল। তারা এ ঘটনার দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান।

লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, “৫ আগস্টের অর্জন চিকিৎসক সমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফসল। সেই অর্জনকে ব্যবহার করে কেউ যেন ব্যক্তি স্বার্থে অপব্যবহার না করে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

চিকিৎসকদের সামাজিক মাধ্যমে আক্রমণ এবং চরিত্র হননের চেষ্টাকেও নিন্দা জানানো হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে ডা. ময়েজ উদ্দিন বলেন, “আমার ছেলের বয়সী কেউ একজন প্রবীণ চিকিৎসককে আঙুল তুলে ‘দালাল’ বললে সেটা সহ্য করা যায় না।”

তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ জানান, গত সেপ্টেম্বরেও আন্দোলনকারীদের কয়েকজন আউটসোর্সিং কর্মীদের বরখাস্ত করে পছন্দের লোক নিয়োগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। এমনকি ওষুধ ও খাবারের টেন্ডারেও তদবিরের চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আবদুর রাহিম বলেন, “চিকিৎসকদের নয়, বরং দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকদের ‘দালাল’ বলা হয়েছে। টেন্ডার তদবিরে কারা ছিল, তা আমাদের জানানো হয়নি।”

গত রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তোলা হয়, যার প্রেক্ষিতে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকেও পাল্টা অবস্থান স্পষ্ট করা হলো।