"আকস্মিক ঝড়-বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড সৈয়দপুর, বিপর্যস্ত জনজীবন"


মৌসুমের ঝড় ও প্রবল বৃষ্টিপাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৫ টার পর শুরু হওয়া ঝড় ও টানা বৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধান, ভুট্টার, কাচা মরিচসহ অন্যাম্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট লন্ডভন্ড হয়েছে। এছাড়া শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে দোকানের চালা উড়ে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে আটকে পড়েছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গতকাল রোববার সকাল ৬ টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত সৈয়দপুর ও এর আশেপাশের এলাকায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২৮ মিলিমিটার। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার।
তিনি আরও বলেন, আজ সোমবার ও আগামী মঙ্গলবারও ঝড়ো বাতাস ও বজ্রসহবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ঝড় ও বৃষ্টিপাতে সৈয়দপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান ও ভুট্টা ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে বা নেতিয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় কাটা ধানের জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সৈয়দপুর শহরের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় ঝড়ে কয়েকটি দোকানের চালা উড়ে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে আটকে থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহেও বিঘ্ন ঘটে।উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিউনের কৃষক হাসান আলী বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ার কথা ছিল, তার আগেই এমন দুর্যোগ আমার কষ্টের ফসল শেষ হয়ে গেল।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ইতিমিধ্যে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলেই মনে হচ্ছে।
এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক নূর-ই-আলম সিদ্দিকীর সাথে। তিনি জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাজমুল হুদা, নীলফামারী প্রতিনিধি
