কমলগঞ্জে ভেজাল ঘি ও মসলা তৈরীর কারখানা, জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে এক সময়ের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বর্তমানে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় সামাইল মিয়া বাড়িতে তৈরি হচ্ছে ভেজাল ঘি। ঘি তৈরীর উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে পুড়া তৈল। ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিকারে প্রশাসন রহস্য জনক কারনে নিরব ভূমিকা পালন করেছে।
সুত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্ধা সামাইল মিয়া। বিগত আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের প্রভাব কাটিয়ে রাধানগর গ্রামের রাস্তার পাশে গড়ে তোলেন ঘি, মরিচ, হলুদ সহ গুড়ো মসলা তৈরি কারখানা। শমসেরনগর বাজারে ও ছিল “শাহী ফুড প্রডাক্টস’-এর শো-রুম। প্রকাশ্যে এসব ভেজাল ঘি মসলা বাজারজাত করে অল্প দিনেই বনে যান বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক। গড়ে তুলেছেন আলীশান বাড়ী। শমসেরনগরে জমি ক্রয় করে তৈরী করেছেন বাড়ী। বিগত সময়ে তৎকালীন কৃষিমস্ত্রীর প্রভাবের কারনে তার বিরূদ্ধে কেউ কথা বলতে বা অভিযান পরিচালনা করতে না পারলে সাহসের সাথে গত ২০১৭ সালে ২০ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাহমুদুল হক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা সহ ভেজাল ঘি ও লক্ষাধিক টাকার ঘি তৈরির উপাদান ধ্বংস করেছিলেন।
ঘি ও মসলা তৈরীর উপাদান ল্যাব ট্রেষ্টের জন্য ও প্রেরণ করেছিলেন। যার দরুন কিছু দিন ব্যবসা বন্ধ রাখেন। বিগত ৫ আগষ্ট সরকারের পট পরিবর্তনের পর সামাইল আওয়ামী লীগের কোলস থেকে বেড়িয়ে এসে কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন।
সুত্রে আরো জানা যায়, বিএনপি নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠার পর সম্প্রতি সামাইল রাধানগরস্থ নিজ বসতবাড়ীর গোপন কক্ষে চালু করেছেন ঘি ও মসলা তৈরীর কারখানা।
সুত্রটি আরো জানায়, তার ঘরের ভেতরে এমন ভাবে কারখানা তৈরী করেছে সাধারণ ভাবে কেউ দেখলে বুঝতেই পারবেনা যে, এখানে কারখানা আছে। সুত্রটি জানায়,সামাইলের বাড়ীর গেইট দিয়ে সামনের ঘরে প্রবেশ করে পিছনের রুমে ২নং বিলডিং এর উপর তলাতে একটি গোপন রুম আছে। ঐ রুমে দেখলে বুঝা যাবেনা রুম আছে। কারন ঘরের দরজা ওয়াল এর সাথে মেচিং কালার করা দেওয়ালে পর্দা দেওয়া আছে। ঐ ঘরের পূর্ব পাশের ঘরেই ঘি তৈরী উপাদান মজুদ ও তৈরী করা হয়। এখানে নিচ তলা গোপন কক্ষের ভেতর দুই শিপ্টে ঘি সহ মসলা তৈরীর কাজ করে থাকেন। তৈরীকৃত এসব ভেজাল ভোগ্যপণ্য রাতের আঁধারে পিকাআপ গাড়ি করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়।
কারখানার মালিক সামাইল মিয়া বলেন, ঘি ও মসলা তৈরীর বিএসটিআই এর অনুমোদন আছে। সরকারি আইন কানুন মেনেই ব্যবসা করছি। এছাড়াও রাজনৈতিক ভাবে আমি কোনো দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সুত্রধর বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। এখন সরজমিন তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজু দত্ত, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
