সোনারগাঁ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত ছাত্রী, আতঙ্কে অভিভাবকরা


সোনারগাঁ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে হঠাৎ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। সোমবার (১৯ মে) ষষ্ঠ, সপ্তম ও দশম শ্রেণির সাতজন শিক্ষার্থী একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়ে। সহপাঠীরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়, যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, বুক ব্যথা ও পাতলা পায়খানার উপসর্গ দেখা গেছে। একই দৃশ্য দেখে আরও দুই-তিনজন শিক্ষার্থীও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে কয়েকজন ছাত্রীর অবস্থা গুরুতর হলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসে। ওই সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
পরদিন মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে আরও একজন ছাত্রী একই উপসর্গে আক্রান্ত হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
ঘটনার পরপরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেলোয়ার হোসেনকে পরিস্থিতি অবহিত করেন। পরে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শারমিন তিথির সঙ্গে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়টি দুই দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করেন।
এদিকে, স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে যে, বহু বছর আগে বিদ্যালয়ের টয়লেটের পাশে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছিলেন, যা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে অতিপ্রাকৃত আতঙ্কও কাজ করছে।
অন্যদিকে, বিদ্যালয় সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমানকে ঘিরে। তিনি ১৪ মার্চ ২০০১ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যবহার করে দমন করার চেষ্টা করতেন বলে জানা যায়। এমনকি অভিভাবক ও ছাত্রীদের সঙ্গেও অসদাচরণ ও অশালীন ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের পর তাকে অবসরে পাঠানো হলেও, এলাকাবাসীর অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি পুনরায় বিদ্যালয়ে ফিরতে নানা তদবির চালাচ্ছেন এবং শিক্ষক ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করছেন। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। এমনকি, তার দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হলেও লজ্জায় মুখ খোলেনি অনেক শিক্ষার্থী।
এই অবস্থায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
নতুন কাগজ/বিএইচ
