শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটি গড়তে চায় চীন: দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশে সামরিক ঘাঁটি গড়তে চায় চীন: দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

বিশ্বজুড়ে কৌশলগত প্রভাব বিস্তার ও সামরিক অবস্থান জোরদারে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশে সামরিক অবকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা করছে চীন—এমন দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ)।

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদনে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, চীন বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ও সামরিক ভিত্তি স্থাপনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আফ্রিকা, এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশকে লক্ষ্য করে চীন সামরিক, বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকেও সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

চীনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে এমন প্রতিবেদন দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বাংলাদেশে সামরিক অবকাঠামো গড়ার পরিকল্পনা করছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই তালিকায় রয়েছে- মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সিসিলিস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, পাপুয়া নিউ গিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও তাজিকিস্তান।

ডিআইএর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত প্রভাব ও সামরিক উপস্থিতির পাল্টা জবাবে চীন তার বৈশ্বিক সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে। এতে বলা হয়, চীনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো- পূর্ব এশিয়ায় প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈশ্বিক নেতৃত্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীন চাইছে তাইওয়ানকে তার মূল ভূখণ্ডে একীভূত করতে, নিজ দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জন করতে।

প্রতিবেদন মতে, এই লক্ষ্য অর্জনে চীন কূটনৈতিক, সামরিক, তথ্য এবং অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার পথ বেছে নিচ্ছে। মার্কিন সংস্থাটির ভাষ্যমতে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার দেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং তার বাইরেও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুত করছেন।

এছাড়া, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট ও মিত্রদের মধ্যে আস্থা ও জনপ্রিয়তা দুর্বল করার দিকেও নজর দিচ্ছে। বেইজিং সতর্কভাবে ওয়াশিংটনের কৌশলগত নীতিগুলোর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করছে এবং এমন পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলে তা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফিলিপাইন, তাইওয়ানসহ যেসব অঞ্চল চীনের নিরাপত্তা ও প্রভাব বলয়ে হুমকি হয়ে উঠছে, সেখানে চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সে সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ ও সমালোচনার মধ্য দিয়ে নিজেদের ‘বিকল্প বৈশ্বিক নেতা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চায় চীন।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন