বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তনের বার্তা, অনিশ্চয়তায় ফারুক আহমেদ


বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নেতৃত্বে পরিবর্তনের গুঞ্জন গত কিছুদিন ধরেই চলছিল। অবশেষে গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন সাবেক ক্রিকেটার ফারুক আহমেদ।
তবে দায়িত্ব নেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য ঘিরে তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। বোর্ডের অভ্যন্তরীণ নীতি, ক্রিকেট পরিচালনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তার অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করেছে অনেককেই।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নেতৃত্বে পরিবর্তনের গুঞ্জন ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা আলোচনা এবার বাস্তবায়নের পথে—এমনটাই মনে করা হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, গত বুধবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বর্তমান বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে ডেকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাকে আর বোর্ডের নেতৃত্বে রাখতে চায় না সরকার।
এ প্রসঙ্গে ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন,
“উপদেষ্টা আমাকে পদত্যাগ করতে বলেননি। শুধু বলেছেন, আমাকে আর তারা ‘কন্টিনিউ’ করাতে চান না। এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। দেখা যাক, কী হয়।”
বিসিবির আসন্ন জরুরি সভা (৩১ মে) ঘিরে নেতৃত্ব বদলের জল্পনা তুঙ্গে। সভার আগেই বড়সড় পরিবর্তনের ঘোষণা আসতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে আমিনুল ইসলাম বুলবুল
নতুন সভাপতির আলোচনায় উঠে এসেছে দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)-তে কর্মরত থাকায় এতদিন বিসিবির নির্বাচনী রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন না। তবে এবার তার দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা জোরালো বলেই বোর্ডসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে।
তবে বুলবুলকে সভাপতি করতে হলে কয়েকটি ধাপ পেরোতে হবে—
প্রথমে তাকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন পেতে হবে।
এরপর সেই কাউন্সিলরদের মধ্য থেকেই পরিচালক হতে হবে।
এবং শেষে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হতে হবে।
এই প্রক্রিয়ায় বুলবুলকে বিসিবিতে আনতে হলে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে হবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকেই।
পর্যবেক্ষণে এনএসসির হস্তক্ষেপ ও গঠনতন্ত্র
এনএসসি আগেও বিসিবিতে এই ধরনের নিয়োগ দিয়েছে। বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে আগে থেকেই কাউন্সিলর ছিলেন, পরে এনএসসি তাকে পরিচালক মনোনীত করে, এরপর তিনিই সভাপতির দায়িত্ব নেন।
এই প্রক্রিয়া অনেকের কাছে সরকারের হস্তক্ষেপ মনে হলেও, বিসিবির গঠনতন্ত্রে এনএসসির এই ভূমিকা অনুমোদিত। এমনকি আইসিসিও তা স্বীকৃতি দেয়। তবে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—একটি মেয়াদে কতোবার এনএসসি পরিচালক পরিবর্তন করতে পারে?
উল্লেখ্য, এর আগে এনএসসি কোটা থেকে পরিচালক হিসেবে প্রথমে ছিলেন সাজ্জাদুল আলম ববি ও জালাল ইউনূস, পরে আসেন ফারুক ও ফাহিম। যদি এবার বুলবুল আসেন, তবে এটি হবে এক মেয়াদে তৃতীয় পরিবর্তন। বিসিবির গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সীমা উল্লেখ না থাকলেও ভবিষ্যতে এ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ৩১ মে-র বোর্ড সভায়?
আগামী ৩১ মে (শনিবার) বিসিবির জরুরি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভায় সভাপতির পদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা অন্তত দিকনির্দেশনা আসবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
