শেষ ম্যাচে জয়ের খোঁজে মরিয়া টাইগাররা


বাংলাদেশ ক্রিকেটে গেল সপ্তাহজুড়ে ছিল নাটকীয়তা ও হতাশার মিশেল। একদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) সভাপতি পদে পরিবর্তন নিয়ে চলেছে আলোচনা-সমালোচনা, অন্যদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে পরপর দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হেরে সিরিজ খুইয়েছে জাতীয় দল।
নতুন সভাপতি হিসেবে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের দায়িত্ব গ্রহণ এবং মাঠে দলের ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে দেশের ক্রিকেট অঙ্গন ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
এই রকম ঘটনাবহুল এক সপ্তাহ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে যেমন নতুন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে, তেমনি সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন দিকনির্দেশনারও ইঙ্গিত দিয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)-এর নেতৃত্বে এসেছে বড় পরিবর্তন। ফারুক আহমেদের স্থানে নতুন সভাপতি হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক এবং দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। গেল শুক্রবার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
তবে তার বোর্ড সভাপতি হিসেবে অভিষেকের দিনটা মাঠের পারফরম্যান্সে সুখকর হয়নি। সেদিনই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ পুরুষ দল।
নতুন প্রশাসনিক যাত্রার সঙ্গে দলকে নতুন করে গুছিয়ে তোলার আশাও রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে মাঠের হতাশাজনক পারফরম্যান্স বোর্ডের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই থাকছে।
নতুন বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনো কেটেছে মাত্র দুই দিন। এত অল্প সময়ে জাতীয় দলের পারফরম্যান্সে তার প্রভাব পড়া স্বাভাবিকভাবেই অসম্ভব। তবে তার নেতৃত্বকে ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে যে আশা তৈরি হয়েছে, সেটি এখনই বাস্তবতার ছোঁয়া পেতে চায় মাঠের ফলাফলে।
আজ (রোববার) পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে নামছে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর সিরিজ ইতোমধ্যে হাতছাড়া। আজ হারলেই ঘরের মাঠে ধবলধোলাইয়ের শিকার হবে টাইগাররা, যা আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার পর আরও হতাশাজনক একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।
সমস্যার মূলে ব্যাটিং, সমাধানে দরকার ধৈর্য ও আক্রমণ
প্রথম দুই ম্যাচেই পাকিস্তান টস জিতে ব্যাট করে তুলেছে ২০১ রান, কিন্তু বাংলাদেশ জবাবে প্রথম ম্যাচে ১৬৪ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১৪৪ রানে গুটিয়ে যায়। শুরুটা ভালো হলেও মাঝের ওভারে উইকেট হারিয়ে বারবার ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যাটারদের আগ্রাসনের ঘাটতি, দায়িত্বজ্ঞানহীন শট এবং চাপের মুখে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া—সবই মিলে ব্যর্থতার চিত্রটা পরিষ্কার।
বোলাররা আশার আলো দেখালেও একার পক্ষে সম্ভব নয়
যদিও বাংলাদেশের বোলাররা বিশেষ করে ডেথ ওভারে ভালো লড়াই করেছেন। শেষ দিকে পাকিস্তানের স্কোর নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন তারা। কিন্তু ব্যাটাররা যদি প্রত্যাশিত দায়িত্ব না নেন, তাহলে বোলারদের লড়াই শুধু পরিসংখ্যানে ঠেকেই থাকবে।
র্যাংকিং বলছে বাস্তবতা, তবে লড়াই বলেই ক্রিকেট
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ এখন ১০ নম্বরে, যা দলটির সাম্প্রতিক ফর্মের প্রতিফলন। তবে আজকের ম্যাচ শুধু একটি জয় নয়—সম্মান রক্ষা, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া এবং সমর্থকদের প্রত্যাশার প্রতিক্রিয়া জানানোর একটি সুযোগ।
ফ্যানদের একাংশ মনে করছেন, বড় রান তাড়া করার চেয়ে টার্গেট ডিফেন্ড করে খেলা বাংলাদেশ দলের জন্য তুলনামূলক সহজ হতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করবে আজকের টস ও কৌশলের ওপর।
