বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

পঞ্চগড়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বিঘ্ন ইন্টারনেট পরিসেবা

পঞ্চগড়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বিঘ্ন ইন্টারনেট পরিসেবা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

পঞ্চগড়ে ঝড়ে উপড়ে গেছে কয়েক হাজার গাছপালা, উড়ে গেছে টিনের চাল, ভেঙে গেছে ঘর বাড়ি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

ঝড়ে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সোমবার রাত সোয়া ১০টা থেকে ১০ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সদর উপজেলার সদরের ধাক্কামারা, মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হাজারো গ্রাহক। বিঘ্ন ইন্টারনেট পরিসেবা। গ্রামগুলোতে কোথাও ঝড়ে গাছ পালা পড়েছে ঘরের উপর। এতে, ভেঙে গেছে ঘর বাড়ি। উড়ে গেছে টিনের চাল। মসজিদ, মাদ্রাসা সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে মঙ্গলবার ঝড়ের সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি প্রশাসন।

ঝড়ে পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার, মসজিদ পাড়া, পুরাতন ক্যাম্প, রামের ডাংগা, রাজনগর, কায়েতপাড়া, তুলারডাংগা, নিমনগর, ইসলামবাগ, জালাসীপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লা এবং সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বুড়িরবান, লাঙ্গলগাঁও, মাগুড়া ইউনিয়নের সিপাইপাড়া, বান্দারাপাড়া সহ গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে গেছে। ধাক্কামারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিও ভেঙে গেছে। গাছ পড়ে অনেকের বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে ভেঙে গেছে সদর উপজেলা ভুমি অফিসের সীমানা প্রাচীর। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সদর থানার বিভিন্ন অবকাঠামো। বিভিন্ন কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে।

এদিকে, ঝড়ের কারণে সোমবার রাত থেকে বিদ্যুত ব্যবস্থা ও ইন্টারনেট পরিসেবাও বিঘ্ন ঘটে। শহরের কয়েকটি এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু হলেও, অধিকাংশ এলাকায় চালু করা যায়নি বিদ্যুত সরবরাহ। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি সড়কে পরে বিভিন্ন এলাকায় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পৌরসভা এলাকার নিমনগর মহল্লার ষাটোর্ধ রশিদ আলী বলেন, আমার জীবনে এমন ঝড় দেখিনি। রাতে বৃষ্টির সাথে হঠাত করে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ে আমার বাড়ির উপর সাতটি গাছে ভেঙে পরেছে। এতে, আমার বাড়িঘর ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এলাকায় অনেকের বাড়ি এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। বলতে গেলে সকলে বাড়িতে এক দুইটি করে গাছ ভেঙে গেছে।

রামের ডাংগা মহল্লার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির উপড়ে তিনটি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে, আমার একটি সেমিপাকা ঘরের দেয়াল ভেঙে গেছে। বড় বড় গাছ পড়ে আমাদের এলাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাত থেকে বিদ্যুত নেই। এর আগে, এমন ঝড় কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না।

ঝড় কললিত রামের ডাংগা এলাকা পরিদর্শকালে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ইকবাল হোসাইন বলেন, গতকাল রাতে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ ঝড় বয়ে গেছে। এখানে সাধারণত এমন ঝড় দেখা যায় না। আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। যে সকল কম আয়ের মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, তাদের সামান্য হলেও সহায়তা চেষ্টা করা হবে।

সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বুড়িরবান এলাকার প্রসন্ন কুমার রায় বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমাদের এইখানে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ে সোমবার রাতে ১৫-২০ মিনিটের সব লন্ডভন্ড হয় গেছে। প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো একটি বট ও পাখুরে গাছ ভেঙে গেছে। বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকা। কখন বিদ্যুৎ পাবো জানিনা।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, রাতে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা এবং সদর উপজেলার মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে আকশ্মিক ঝড় বয়ে যায়। পৌরসভাসহ দুই ইউনিয়নে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির সঠিক পরিমাণ করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। সব তথ্য পাওয়া গেলে ঝড়ে সঠিক পরিমান জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  


আমির খসরু লাবলু  প্রতিনিধি, পঞ্চগড়। 
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন