বরিশালের কামারপট্টিতে ঈদের ব্যস্ততা, বাড়ছে দা-বঁটি-ছুরির চাহিদা


পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে বরিশালের কামারপট্টিগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত টুংটাং হাতুড়ির শব্দে মুখর শহরের কামারপাড়া ও গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট কামার দোকানগুলো। দাউদাউ আগুনে লোহা গলিয়ে তৈরি হচ্ছে কোরবানির অপরিহার্য সরঞ্জাম— দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি।
বরিশাল নগরী ছাড়াও সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বসেছে অস্থায়ী কামার দোকান। ঈদ উপলক্ষে বাজারে এসব সরঞ্জামের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিক্রেতারা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতারাও দলে দলে ছুটে আসছেন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে।
সদর উপজেলার কামার স্যামল বলেন, “স্থানীয় চাহিদা তো রয়েছেই, পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে অর্ডার দিচ্ছেন। এবার ঈদে চাহিদা অনেক বেশি।”
আরেক কামার সিমুল বলেন, “বছরজুড়ে কাজ কম থাকে, কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে প্রচুর অর্ডার পাই। ঈদের বিক্রিই আমাদের বছরের বেশ কয়েক মাসের জীবিকা নিশ্চিত করে।”
দামের দিক থেকে জানা যায়, বর্তমানে ছোট ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ২৫০ টাকা, বড় ছুরি ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বড় বঁটি ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা এবং বড় চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
শহরের বিভিন্ন কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ তৈরি করছেন নতুন সরঞ্জাম, কেউ পুরোনো ছুরি-বঁটি শান দিচ্ছেন। কারিগরদের কপাল বেয়ে ঝরছে ঘাম, চোখে-মুখে ক্লান্তি থাকলেও নেই কোনো বিরতি।
একজন ক্রেতা বলেন, “প্রতিবার ঈদের আগে এখান থেকেই দা-ছুরি কিনি। এবার দাম কিছুটা বেশি হলেও মান ভালো হওয়ায় কিনে নিচ্ছি।”
কোরবানির ঈদে পশু জবাইয়ের জন্য ধারালো সরঞ্জাম আবশ্যক হওয়ায় এ সময়ে কামারদের কর্মচাঞ্চল্যতা ঈদের প্রস্তুতির অপরিহার্য অংশ হয়ে ওঠে। ঈদের দিন পর্যন্ত এ ব্যস্ততা অব্যাহত থাকবে বলে জানালেন কামারপট্টির কর্মীরা।
