বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

ছিনতাইয়ের নাটকেও শেষ রক্ষা হয়নি!

ছিনতাইয়ের নাটকেও শেষ রক্ষা হয়নি!
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে বিকাশের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে আত্মসাৎকৃত ২ লাখ ২১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা যায়, বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার (ডিএসও) খলিলুর রহমান আক্তার (৩২) ঋণগ্রস্ত ও আর্থিক সংকটে পড়েন। এ অবস্থায় বিকাশের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্য তিনি তার সহকর্মী সাইদুল ইসলাম (৩৫) এর সাথে পরিকল্পনা করে একটি ছিনতাইয়ের নাটক মঞ্চস্থ করেন।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, গত ৪ঠা জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন-ভোজপুর সড়কের তিতপুর এলাকার বিলাসেরপাড় ব্রিজের উপর ছিনতাইয়ের ঘটনার সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ তদন্তে নামেন।

ভুক্তভোগীর পরিচয়ে খলিলুর রহমান আক্তার অভিযোগ করেন, স্থানীয় আইয়ুব মার্কেট পরিদর্শন শেষে তিনি মোটরসাইকেলে ভোজপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে তিতপুর এলাকায় অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তি তার গতিরোধ করে ছুরিকাঘাত করে এবং ব্যাগে থাকা আনুমানিক ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তবে ঘটনার তদন্তে পুলিশ এবং খলিলুরের বর্ণনায় একাধিক অসঙ্গতিপূর্ণ সন্দেহজনক পরিলক্ষিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গভীর তদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই বেরিয়ে আসে ঘটনাটির চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্তে এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ছিনতাইয়ের নাটক। খলিলুর ও তার সহকর্মী সাইদুল মিলে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, খলিলুর নিজেই মোটরসাইকেল থামান এবং সাইদুল তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ও টাকা থাকা ব্যাগটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে পুলিশ খলিলুরকে তার বাড়ি থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি আসল ঘটনা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে আত্মসাৎ করা ২ লাখ ২১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ জানিয়েছে, বিকাশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েও খলিলুর নিজের অবস্থান ব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় নেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে দ্রুতই তা প্রকৃত সত্য বেড়িয়ে আসে।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম এবিষয়ে বলেন, আমরা শুরু থেকেই ঘটনাটিকে সন্দেহের চোঁখে দেখছিলাম। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে আমরা সত্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। কোনো ধরনের অপরাধীই সত্যকে চাঁপা দিয়ে রেহাই পাবে না। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আটককৃত খলিলুর রহমান আক্তার কালাপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহিদ এর পুত্র এবং সাইদুল ইসলাম একই এলাকার নুর মিয়ার পুত্র।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন