আজ উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা
রাত পোহালেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন শুরু হবে। ঈদুল আজহা, যা ‘কোরবানির ঈদ’ নামেও পরিচিত, যুগ যুগ ধরে আত্মত্যাগের শিক্ষা দিয়ে আসছে।
আজ সকালে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পছন্দের ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকাত ওয়াজিব ঈদের নামাজ আদায় করবেন। এরপর পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করবেন।
প্রধান ঈদ জামাত ঘিরে নিরাপত্তার বন্দোবস্তুও সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা নিরাপত্তা আয়োজন পর্যবেক্ষণ করেছেন। যারা ঈদগাহে ঈদের নামাজে যাবেন, তাদের উদ্দেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেছেন, এমন কোনো ডিভাইস বা এমন কোনো যন্ত্রপাতি আনবেন না যেটা নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হতে পারে। প্রয়োজনে আপনাদের জায়নামাজও আনার দরকার নাই, পানির বোতলও আনার দরকার নাই।
রাজধানীতে ঈদের জামাতের সময়সূচি:
জাতীয় ঈদগাহ ময়দান: প্রধান জামাত সকাল ৭:৩০টায়। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মো. আবদুল মালেক।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ: এখানে মোট ৫টি জামাত হবে—সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা ও ১০:৪৫ মিনিটে।
বিশেষ পরিস্থিতি: আবহাওয়া প্রতিকূল হলে প্রধান জামাত সকাল ৮টায় বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ: ৭:৩০ ও ৮:৩০টায়।
সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মসজিদ: ৭:০০টায়।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল লন: ৮:০০টায়।
ফজলুল হক মুসলিম হল মাঠ: ৮:০০টায়।
ঢাকা মহানগরীতে ১১৮টি ঈদগাহে ও ১,৬২১টি মসজিদে জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয় ঈদগাহে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করেছে। ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা ও অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম। প্রবেশপথে থাকবে আর্চওয়ে ও তল্লাশি ব্যবস্থা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের ব্যক্তিগত ডিভাইস, জায়নামাজ বা পানির বোতল না আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জাতীয় ঈদগাহের জামাতে প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, এ বছর ঢাকা মহানগরীতে মোট ১১৮টি ঈদগাহে এবং এক হাজার ৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এখানে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি, উপদেষ্টা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঈদগাহে পুরুষদের জন্য ৪টি ও নারীদের জন্য একটি গেট থাকবে। এসব গেট দিয়ে মুসল্লিরা ঈদ জামাতে প্রবেশ করতে পারবেন।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ঈদ জামাতের ব্যাপারে তিনি বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে প্রথম জামাত শুরু হবে সকাল ৭টায়। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং ঢাকার অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদ জামাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি সমন্বিত, সুদৃঢ় ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় এরই মধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ঈদগাহ ময়দানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদগাহ ময়দানে আসার প্রধান তিনটি রাস্তার প্রবেশ মুখে অর্থাৎ মৎস্য ভবন ক্রসিং, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ও হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশপথ সমূহে আর্চওয়ের মাধ্যমে সব মুসল্লিকে প্রবেশ করতে হবে।
