লন্ডনে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস


চার দিনের সরকারি সফরে লন্ডনে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (১০ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, সোমবার (৯ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন ড. ইউনূস।
এই সফরে তিনি ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে সাক্ষাৎ করবেন এবং রাজা চার্লসের হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
সফরকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ১১ জুন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে। পরদিন ১২ জুন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবেন ড. ইউনূস।
এছাড়া, লন্ডনভিত্তিক নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপেও অংশ নেবেন তিনি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ইউনূস-স্টারমার বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতা, এবং বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে মূলত যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করাই হবে এই সফরের মূল লক্ষ্য।
বিশেষ করে, দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, নির্বাচন, এবং রাজনৈতিক সহিংসতার বিচার সংক্রান্ত কার্যক্রমে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাইবে ঢাকা।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, তাদের সন্তান এবং সাবেক মন্ত্রীসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তাদের কেউ কেউ যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি কিনেছেন বলে সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে।
অন্যদিকে, বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশকে চারটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রিটেন। রাজনৈতিক পরিবর্তনে সেই আলোচনা থমকে গেলেও এবার নতুনভাবে আলোচনায় ফিরতে পারে বিষয়টি।
স্মরণযোগ্য, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাবেক সরকার পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকে তিনি জাতিসংঘের অধিবেশন, কপ-২৯ সম্মেলন, ডি-৮, দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, চীন, থাইল্যান্ড, কাতার, ভ্যাটিকান এবং জাপানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সফর করেছেন।
