বরিশালে চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী!


বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে । বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে দোকান-পাট,রাস্তা ঘাট গোডাউন-গ্যারেজ, অফিস-ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সব খানেই কম বেশি বৈদ্যুতিক তার চোরের সংঘবদ্ধ চুরির ঘটনা ঘটছে।
সাধারণ মানুষ তো বটেই, সমাজের ভিআইপি, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদেরও বাসা বাড়ি, কলকারখানায়ও হানা দিতে তারা পিছপা হচ্ছে না। চোরেরা এতবেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, চুরির সময় কেউ দেখে ফেললে তাকেও ধারালো চাপাতি বা ছুরি দিয়ে আঘাত করে অথবা হত্যার হুমকি দেয়। প্রশাসনের এ বিষয় তৎপরতা না থাকায় কেউ থানায় অভিযোগ করছে না। বেশ কিছু স্থানে পর্যাপ্ত সিকিউরিটি এবং সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা স্বত্তেও চোর হানা দিয়েছে নগরীর বিভিন্ন বাসাবাড়িসহ বিসিক শিল্প নগরীর বিভিন্ন ফেক্টরিতে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, বাসা বাড়িতে, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে,সিসি-টিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়লেও রাস্তা-ঘাটে-মোড়ে তেমন সিসি-টিভি ক্যামেরা স্থাপন না করা, পাড়া মহল্লায় আগের মতো পুলিশের নিয়মিত টহলের অনুপস্থিতির কারণে চোরদের উৎপাত বেড়ে গেছে।
ভাটিখানা বাসিন্দা মো. তোরিন বলেন, গত মাসের ১৪ তারিখ আমাদের মোটরসাইকেল চুরি হয় বাসায় সামনে থেকে। চোর মাস্ক পোড়ে থাকায় আমরা তাকে সনাক্ত করতে পারিনি তবে থানায় জিডি করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে গাড়ি নোয়াখালী এলাকায় আছে বলে জেনেছি, গাড়ি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছি। বর্তমানে চোরের উৎপাত বেড়ে গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে চুরির ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বেশিরভাগ সময় কোন ফলাফল না পাওয়ায় ভুক্তভোগীরা মামলা করতে উৎসাহ পায় না। ফলে বেশিরভাগ চুরির ঘটনা নীরবে থেকে যায় এবং পাড়া মহল্লায় চোরের সংঘবদ্ধ চক্র বার বার চুরি করতে উৎসাহ পায়। পাড়া মহল্লায় নিয়মিত টহল, চুরির মামলায় দ্রুত তদন্ত ও বিচার এবং থানায় রেকর্ডধারী যে সমস্ত ছিঁচকে চোর, তালা কাঁটা চোর এবং সংঘবদ্ধ চোরের তালিকা আছে তার সূত্র ধরে গ্রেফতার অভিযান চালালে চুরির ঘটনা দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব।
বিসিক শীল্প নগরীর নিরাপত্তাকর্মী মোঃ জাফর জানান, বিগত দিনে এমন ঘটনা আরও ঘটেছে , তবে চুরি আটকাতে আমাদের তৎপরতা রয়েছে। তবুও কিছু কিছু সময় আসপাশের চোর চক্র সুযোগ নিয়ে চুরি করবার চেষ্টা চালায়। তবে কিছু দিন পূর্বে তার চুরি করতে এলে কাটা ফেলে পালিয়ে যায় চোর চক্র।
কাউনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, কাউনিয়া থানা পুলিশ টহল দিচ্ছে আগের তুলনায় আরও বেশি। সর্বোচ্চ পরিমান সতর্ক থাকার পরেও কিছু কিছু চুরির ঘটনায় দায় এড়ানো যায় না বলে স্বীকার করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে অনেক জায়গায় সাধারণ ডায়েরি করা সাপেক্ষে চোর এবং চুরির মালামাল উদ্ধার করার অনেক রেকর্ড আছে আমাদের।
তিনি আরও জানান, আমাদের নিয়মিত টহল আছে, নিয়মিত যেসব অভিযোগ আসছে সেগুলো তদন্ত করছি। চোর আটক করে অথবা তথ্য দিয়ে আমাদের সাহায্য করছে সাধারন মানুষ।
সুশীল সমাজ প্রতিনিধিরা বলছেন,, বর্তমানে শুধু চুরি ডাকাতি ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নজরদারী করছে প্রশাসন। কিন্তু সংঘবদ্ধ চোর চক্রের বিষয় কোনো অভিযোগ অথবা সঠিক তথ্য না থাকায় তাদের নির্মুল করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে, এলাকাভিত্তিক নজরদারি বৃদ্ধি করা জরুরী বলে মনে করছেন তারা। সেই সাথে তারা এও বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা না করে প্রতিটা সড়ক, অলিগলিতে গোপন নজরদারি বারানো প্রয়োজন।
