শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
Natun Kagoj

চামড়া কিনে বিপাকে ফুলবাড়ীর ব্যবসায়ীরা

চামড়া কিনে বিপাকে ফুলবাড়ীর ব্যবসায়ীরা
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলী আকবর হাশমী (৬৫) পেশায় চামড়া ব্যবসায়ী। বাড়ী ফুলবাড়ী পৌরশহরের মধ্যগৌরীপাড়া হাশমীপট্টিতে। উপজেলার বিভিন্ন খুচরা ও মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাইকারি হিসেবে কোরবানীর পশুর চামড়া কিনে মজুদ করেন নিজ আড়তে।

এ বছর দেড় হাজার গরুর চামড়া এবং এক হাজার ছাগলের চামড়া কিনেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। প্রতিটি গরুর চামড়া কিনেছেন আকার ও প্রকার ভেদে গড়ে ৮৫০ টাকায় আর ছাগলের চামড়া ৫০ টাকায়। গরু ও ছাগলের প্রতিটি কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে খরচ পড়ছে গড়ে ২৫০ থেকে ১৫০ টাকা করে।

সেই হিসাবে প্রতিটি গরুর চামড়ার ক্রয়মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের ২০০ টাকা। এসব চামড়া বিক্রি করতে হবে এর চেয়ে বেশি দামে। কিন্তু বাজারে সেই পরিস্থিতি নেই বলে দাবি আলী আকবর হাশমীর। মোট ১৮ লাখ ৫০০ টাকার চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন তিনি। ঢাকার ট্যানারি মালিকদের মনোনিত নাটোর, পলাশবাড়ী ও তারাগঞ্জের চামড়ার আড়তদার চামড়া কেনা শুরু করলে শেষ তক বোঝা যাবে এ বছর লাভ হবে নাকি বিগত বছরগুলোর মতোই লোকসান গুণতে হবে।

চামড়া ব্যবসায়ী আলী আকবর হাশমী বলেন, পৈত্রিক সূত্রে চামড়ার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ব্যাংকের ঋণদেনা করে কোরবানীর পশুর চামড়া কিনে প্রক্রিয়াজাত করে আগে সরাসরি ঢাকার ট্যানারিতে চামড়া পাঠানো হতো। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা টাকা দিতে বিলম্ব করাসহ বছরের পর বছর টাকা আটকে রাখায় ব্যবসায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এখনও তার কয়েকজন ট্যানারি মালিকের কাছ অন্তত ৩০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। যার মধ্যে একজন মালিক ব্যবসা গুটিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। এ কারণে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ মৌসুমী ও ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদে চামড়া কিনে বাকিতে চামড়া দিতে গিয়ে প্রতি বছর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এখন ট্যানারিতে সরাসরি চামড়া বিক্রি না করে ট্যানারী মনোনিত নাটোর, পলাশবাড়ী ও তারাগঞ্জের আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করে থাকেন। এতেও টাকা তুলতে তুলতে অন্তত ৩-৪ মাস লেগে যায়। সময় মতো টাকা না পাওয়ায় ব্যাংক ঋণের বোঝা বেড়ে যায়। 

তিনি বলেন, গত বছর চামড়া কিনে অন্তত ৫ লাখ টাকার মতো লোকসান গুণতে হয়েছে। এ বছর সরকার দাম নির্ধারণ করলেও ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া না কেনায় বিক্রেতারা যেমন দাম পাননি, তেমনি ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কিনে আশানুরূপ দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) এর পর ট্যানারির লোকজন চামড়া কিনতে নামলে বোঝা যাবে এবারও লোকসান হবে নাকি লাভ হবে? একই অবস্থা বিরাজ করছে অন্যান্য চামড়া ব্যবসায়ীদেরও।#


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন